মালদা , 18 অক্টোবর : মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার পর কোনও পরীক্ষার্থীকে যদি বলা হয়, তাকে নবম শ্রেণির পরীক্ষা দিতে হবে ! তাহলে সেই পড়ুয়ার মনের অবস্থা কী হবে ? তাছাড়া একথা শুনে সবাই বলতে বাধ্য, এমনটা আবার হয় নাকি ! কিন্তু ঠিক তেমনই ঘটতে চলেছে মালদা কলেজে ৷ রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্নাতকোত্তর স্তরে চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলেও এবার পড়ুয়াদের তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা দিতে হবে ৷ কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষণায় চমকে উঠেছে জেলার শিক্ষামহল ৷ স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জেগেছে পড়ুয়া ও অভিভাবক মহলেও ৷ ETV ভারতের মুখোমুখি হয়ে এই নিয়ে খোলসা করলেন কলেজের অধ্যক্ষ ৷
চতুর্থ সেমেস্টার পরীক্ষার শেষে তৃতীয়র বিজ্ঞপ্তি মালদা কলেজের
চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা দিয়েছেন মালদা কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও ৷ এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষ অনলাইনে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হবে ৷ এদিকে , ছাত্রছাত্রীদের একাংশ অভিযোগ করছেন, এর আগে তারা তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা দিয়েছেন ৷
কোরোনা আবহে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শ্রেণির পড়ুয়াদের তৃতীয় সেমেস্টারের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে ৷ তারপর সম্প্রতি পড়ুয়াদের চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে ৷ একইসঙ্গে চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা দিয়েছেন মালদা কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও ৷ এরপরেই কলেজ কর্তৃপক্ষ অনলাইনে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হবে ৷ এদিকে , ছাত্রছাত্রীদের একাংশ অভিযোগ করছেন, এর আগে তারা তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা দিয়েছেন ৷ তার ফল প্রকাশ না হলেও তাঁদের চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা দিতে হয়েছে ৷ এই ঘটনায় পড়ুয়াদের একাংশ কলেজ কর্তৃপক্ষকেই দায়ি করেছেন ৷
যদিও মালদা কলেজের অধ্যক্ষ মানসকুমার বৈদ্য বলছেন , “মালদা কলেজের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স স্বশাসিত পদ্ধতিতে চলে ৷ লকডাউনের আগে আমাদের তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৷ কোনও বিষয়ের একটি, কোনও বিষয়ের দু’টি পেপারের পরীক্ষা হয়৷ এরই মধ্যে আমাদের কাছে নির্দেশ আসে, UGC গাইডলাইন মেনে 80-20 শতাংশ কনসেপ্টে MCQ-এর মাধ্যমে পরীক্ষা নিতে হবে ৷ পরে ফের UGC-র নির্দেশে 80-20 শতাংশ পদ্ধতি বাতিল করে আমরা পড়ুয়াদের পরীক্ষা নিই ৷ এরপর অনলাইনে পড়ুয়াদের সমস্ত ধরনের সাহায্য করার পর চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা হয় ৷ এরই মধ্যে দেখা যায়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ওপেন বুক সিস্টেমে তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা নিচ্ছে ৷ আমাদের সেই পরীক্ষা হয়েছিল কিছুটা অনলাইন, কিছুটা হার্ড কপিতে ৷ সেই সময় 80-20 শতাংশ কনসেপ্ট অনুযায়ী আমরা পরীক্ষা নিয়েছিলাম ৷ এখনও যেহেতু চতুর্থ সেমেস্টারের ফল প্রকাশ হয়নি, তাই তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে অনেক চিন্তাভাবনা করে আমাদের পরীক্ষা মনিটারিং কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, ভবিষ্যতে পরীক্ষার ফল নিয়ে যাতে পড়ুয়াদের কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য তৃতীয় সেমেস্টারের যে ক’টি পেপারের পরীক্ষা বাকি আছে, চতুর্থ সেমেস্টারের মতো সেগুলিরও অনলাইনে পরীক্ষা হবে ৷ তৃতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের ফলাফল একইসঙ্গে প্রকাশ করা হবে ৷ এনিয়ে পড়ুয়ারাও যেমন চাপে আছে, প্রতি মুহূর্তে পরীক্ষা পদ্ধতি বদলে যাওয়ায় আমরাও চাপে রয়েছি ৷ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে ওপেন বুক সিস্টেমে পরীক্ষা নিয়েছে, আমরাও সেই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেব৷ তা না হলে দুই জায়গায় প্রকাশিত ফলের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা থাকবে ৷ এনিয়ে আমি নিজে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেছি ৷ তারা আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে ৷”