মালদা, 5 জুলাই: 'রেগে আগুন, তেলে বেগুন ৷' মঙ্গলবার তৃণমূল সুপ্রিমো জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে সিপিএম বড্ড বেড়েছে ৷ সংগঠনে নয়, বেড়েছে দৃশ্য দূষণে, শব্দ দূষণে ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া চাইতেই যেন জ্বলে ওঠেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ৷ পালটা তিনি জানিয়ে দেন, মমতা নিজেই দৃশ্য দূষণ ৷ তাঁর দল শব্দ দূষণ করে ৷ একই সঙ্গে, তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী, আগামী ছ'মাসের মধ্যে বিজেপিতে যোগ দেবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে বুধবার মালদায় আসেন সিপিএমের এই পলিটব্যুরো সদস্য ৷ সকাল 11টায় দলের জেলা সদর দফতর মিহির দাস ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি ৷ বৈঠকে একাধিক ইস্যুতে তৃণমূল ও বিজেপির উদ্দেশ্যে তোপ দাগেন সেলিম ৷ তিনি বলেন, "এরাজ্যে দুর্নীতি আর দুষ্কৃতীর একটি চক্র রয়েছে ৷ দুর্জন ছাড়া মহাজনি কারবার চলে না ৷ দুষ্কৃতী যোগ ছাড়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা লুঠ কিছুতেই সম্ভব নয় ৷ আমাদের এই চক্রকে ভাঙতে হবে ৷ এই চক্র গত 10 বছরে আরও জাঁকিয়ে বসেছে ৷" কারণ হিসাবে তাঁর ব্যাখ্য়া, এর মধ্যে বিজেপি এবং আরএসএস ঢুকে হিন্দু আর মুসলিমকে আলাদা করার চেষ্টা করেছে ৷ এসব করে ওরা সবাইকে গুলিয়ে দিয়েছে ৷ এর ফলেই এখন উত্তরবঙ্গ আর দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়েছে ৷ মণিপুরে বিজেপি যেমনটা করেছে বলেও অভিযোগ করেন সেলিম ৷ সেলিম বলেন, "ওখানে তো ডবল ইঞ্জিন সরকার ! ওখানে বিজেপির নেতা, মন্ত্রী কিংবা কোনও বড় পদাধিকারি সেনার নিরাপত্তা ছাড়া বেরোতে পারছে না ৷ ঠিক যেমন এখানে পুলিশি নিরাপত্তা ছাড়া কোনও তৃণমূল নেতা বাজারে যাওয়ারও সাহস পাচ্ছেন না ৷ আর এখানে যখন কোনও ঘটনা ঘটছে, তৃণমূল-তৃণমূলকে খুন করছে, তখনও বিরোধী সিপিএম, কংগ্রেস বা আইএসএফের নামে মামলা করা হচ্ছে ৷ গত এক মাসে সিপিএমের হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে ৷ আসলে বিজেপি বলছে, বিরোধীশূন্য ভারত, আর তৃণমূল বলছে বিরোধীশূন্য বাংলা ৷ এসবের জন্যই খুনোখুনি হচ্ছে ৷ মানুষের রায় নিতে এত ভয় কেন? এত উন্নয়ন আর বিকাশ তো করেছে ৷"
এরপরই তৃণমূল নেত্রীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয় সেলিমের কাছে ৷ বিষয়টি শুনেই তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন তিনি ৷ বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো লুকিয়ে ছিলেন ৷ শুভেন্দু যখন তৃণমূলে ছিলেন, তখন তৃণমূলের ঝান্ডার মাঝখানে মমতার ছবি লাগানো থাকত ৷ যখন বুঝেছে, তৃণমূল ওই ঝান্ডা থেকে মমতার মুখ সরিয়ে দিয়েছে ৷ আগে যিনি ছিলেন দলের অ্যাসেট, এখন তিনি দলের লায়াবিলিটি ৷ টাকা লুঠ হচ্ছে ৷ তখন তাঁর মেজাজ গরম হয় না? এখানে ঘরের টাকা, অঙ্গনওয়াড়ির টাকা, মিড-ডে মিলের টাকা লুট হচ্ছে ৷ তখন তাঁর রাগ হয় না? আমরা চোর তাড়াতে বলায় তাঁর লাল ঝান্ডা দেখে রাগ হচ্ছে ৷ আমরা পিসি-ভাইপো-সহ সব চোরকে গ্রেফতারির দাবি তুলেছি ৷ প্রথম তিনি যখন মুখ্যমন্ত্রী হন, তখন সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে তিনি দৃশ্য দূষণ বন্ধ করার কথা বলেছিলেন ৷"