মালদা, 27 জানুয়ারি : একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মালদায় ছয়টি আসন টার্গেট করেছে তাঁর দল৷ তবে অন্য দলের সঙ্গে সমাঝোতা হলে জোটের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত বদলে যেতে পারে৷ ধর্মীয় জালসায় অংশ নিতে মালদায় এসে এমনই মন্তব্য করলেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি৷
গতকাল বিকেলে কালিয়াচকের বামনগ্রামে একটি মসজিদ নির্মাণকল্পে ধর্মীয় জালসার আয়োজন করা হয়৷ সেখানে কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে অংশ নেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি৷ সম্প্রতি, তিনি ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট নামে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন৷ একুশের নির্বাচনে তাঁর দল যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছে, সেটাও ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি৷ বিশেষত রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতেই নজর রয়েছে তাঁর৷ রাজনৈতিক দল গঠনের পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুন মুসলিমিন (মিম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি৷ একুশের ভোটে এই দুই দলের জোট নিয়েও দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে৷ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে সম্প্রতি ফুরফুরা শরিফে যান দক্ষিণ মালদার কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরি (ডালু মিঞা)৷ কংগ্রেসের তরফেও নাকি আব্বাস সাহেবকে নির্বাচনী জোটের কথা বলা হয়েছে৷
আব্বাস সিদ্দিকি জানিয়েছেন, "আসাদ সাহেব বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে তিনি আসছেন, এখানে তিনি রাজনীতি করবেন৷ আমি যে ফ্রন্ট তৈরি করেছি তাতে তিনি থাকবেন৷ আমার নির্দেশ অনুযায়ী তিনি কাজ করবেন৷ তাঁর সঙ্গে আমার আলোচনা চলছে৷ আরও অনেক দলের সঙ্গেই আলোচনা চলছে৷ সময় আসলে কে কোথায় প্রার্থী দিচ্ছে, তা আমরা জানিয়ে দেব৷ কংগ্রেসও আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে৷ তৃণমূলও লোক পাঠিয়েছে৷ মালদায় আমাদের টার্গেট রয়েছে ছ’টি আসন৷ যদি সমঝোতা হয় তবে মালদায় অত আসনে আমরা প্রার্থী দেব না৷ সমঝোতা না হলে আমরা এখানে ছয়টি আসনেই প্রার্থী দেব৷"
মালদায় প্রার্থী দিচ্ছেন আব্বাস আরও পড়ুন : মমতা কিছুই করেনি, বিজেপি ক্ষতিকারক : আব্বাস সিদ্দিকী
তিনি আরও বলেন, "বলা হচ্ছে, আমরা নাকি ভোট কাটার জন্য ভোটে লড়তে চলেছি৷ যদি ভোট কাটাই লক্ষ্য হত, তবে আমরা সব আসনেই প্রার্থী দিতাম৷ আসলে যারা আমাদের ভয় পাচ্ছে, তারাই এসব বলছে৷ আমরা আসলে অনেকের দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে৷ আমরা প্রথমে শুধু বিজেপিকেই দেশের পক্ষে ক্ষতিকারক ভেবেছিলাম, কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে, বিজেপিকে আনার পিছনে তৃণমূলেরই হাত রয়েছে৷" তিনি আরও বলেন, "একটা কথা বলতে পারি, যত দিন যাচ্ছে, মানুষ কিন্তু আমাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে৷ তৃণমূলের অত্যাচারে মানুষ ওদের থেকে মুখ ফিরিয়েছে৷ এখন তৃণমূলের লোকজনই বিজেপিতে ঢুকছে৷ ফলে মানুষ বিজেপি থেকেও দূরে চলে যাচ্ছে৷ তার উপর বিজেপি কৃষকদের উপর যে অত্যাচার চালাচ্ছে, তা মানুষ মেনে নিতে পারছে না৷ বাম-কংগ্রেসের অবস্থা এখন ভালো নয়৷ এদিকে আমাদের দলে সব নতুন মুখ৷ নতুন মুখ নিয়েই আমরা দল করেছি৷ মহাজোট হলে আমরা রাজ্যের প্রতিটি আসনেই লড়ব৷ কিন্তু সেই জোট না হলে আমরা যে ছোট দলগুলি মিলে জোট করছি, তারা সবাই আলোচনা করে লড়াইয়ের আসন সংখ্যা ঠিক করব৷"