মালদা, 12 মার্চ : তেলাঙ্গানায় কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল মালদার এক পরিযায়ী শ্রমিকের ৷ মৃত শ্রমিকের নাম সুশান্ত চৌধুরী ৷ বয়স মাত্র 22 বছর ৷ বাড়ি রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের রতুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম রুকুন্দিপুর গ্রামে ৷ তেলাঙ্গানার কথুর এলাকায় নির্মীয়মাণ টাওয়ার থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ এখনও তাঁর মৃতদেহ গ্রামে এসে পৌঁছায়নি ৷ খবর পেয়ে আজ তাঁর বাড়িতে যান সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা শেখ ইয়াসিন ৷ তিনি এই শ্রমিকের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুশান্তদের পরিবারের সবাই শ্রমিক ৷ বছরের বেশিরভাগ সময় ভিনরাজ্যে কাজ করেন তাঁরা ৷ তবে লকডাউনের সময় প্রত্যেকেই বাড়ি ফিরে এসেছিল ৷ দীর্ঘদিন উপার্জন বন্ধ থাকায় পরিবারে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছিল ৷ তাই মাস দুয়েক আগে বাবা দেবেন চৌধুরী ও ভাই রাজার সঙ্গে তেলাঙ্গানায় টাওয়ার নির্মাণের কাজে যান সুশান্ত ৷ বাড়িতে রেখে যান মা পূর্ণিমা দেবী, দাদা রঞ্জিত চৌধুরী ও একমাত্র বোন পায়েলকে ৷
আরও পড়ুন : কেরলে দুর্ঘটনায় মৃত্যু মুর্শিদাবাদের দুই পরিযায়ী শ্রমিকের
বুধবার রাতে বাড়িতে খবর আসে, টাওয়ার থেকে দুর্ঘটনাবশত নীচে পড়ে মারা গিয়েছেন সুশান্ত ৷ এরপরেই পরিবারে কান্নার রোল ওঠে ৷ গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া ৷ ভাই রঞ্জিত বলেন, “তেলাঙ্গানায় টাওয়ারের কাজ করতে গিয়ে আমার মেজ ভাই মারা গিয়েছে ৷ কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, এখনও জানি না ৷ মৃতদেহ এখনও বাড়িতে আসেনি ৷ কবে আসবে, জানি না ৷ এই পরিস্থিতিতে আমরা যা হোক কিছু একটা সাহায্য চাইছি ৷ মাথা এখন কাজ করছে না ৷”
টাওয়ারের কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত মালদার পরিযায়ী শ্রমিক বিজেপি নেতা শেখ ইয়াসিন মৃত সুশান্তর পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেন ৷ দাবি করেন, তিনি ভোটের রাজনীতি করতে এখানে আসেননি ৷ রতুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষের পাশে তিনি আগেও ছিলেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন ৷ তিনি বলেন, “এই গ্রামের সুশান্ত চৌধুরী তেলাঙ্গানায় কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে ৷ আজ তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি ৷ এলাকায় কাজ না পেয়ে এখানকার মানুষ বাইরে যাচ্ছে ৷ এটা রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা ৷ লকডাউনেও দেখেছি, এই রাজ্য থেকে হাজার হাজার যুবক বাইরে কাজ করতে গিয়েছিল ৷ কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফে তাদের কোনও সহযোগিতা করা হয়নি ৷ আমি ব্যক্তিগতভাবে সেই সময়ও রতুয়ার মানুষের পাশে ছিলাম ৷ মানুষের পাশে থাকা আমার নেশা ৷ অন্য নেতা থেকে আমি আলাদা ৷ রতুয়া ও মালদার মানুষ সেটা জানে ৷ মানুষের বিপদে এসে ভোট প্রচারের কথা ভাবতেই পারি না ৷”