জেলা পুলিশ সুপারের বক্তব্য মালদা, 22 জুলাই: সোশাল মিডিয়ায় দুই মহিলাকে নির্যাতনের যে ভিডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, সেই ঘটনা মালদার বামনগোলার পাকুয়াহাটেই ঘটেছিল বলে শনিবার স্বীকার করলেন জেলা পুলিশ সুপার ৷ এই ঘটনায় এখনও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব ৷ তবে আরও কয়েকজনের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি ৷ তবে পুলিশ সুপারের বক্তব্য, ওই নির্যাতিতা দুই মহিলা ক’দিন আগে নালাগোলা ফাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে জানতে পেরেছিলেন বামনগোলা থানার আইসি ৷ তার ভিত্তিতে ওই দুই মহিলাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে ৷
পুলিশ জানিয়েছে, আক্রান্ত দুই মহিলা তফশিলি জাতিভুক্ত ৷ যারা তাদের উপর হামলা চালিয়েছে তারা মূলত তফশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের ৷ এই ঘটনায় যদি এখানকার পুলিশকর্মীদের কোনও গাফিলতি থাকে তবে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার ৷ কিন্তু আক্রান্ত দুই মহিলাকেও পুলিশ গ্রেফতার করল কেন ৷ পুলিশ সুপারের বক্তব্য, “বামনগোলা থানার আইসি একটি ঘটনায় ওই দুই মহিলার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন ৷ নালাগোলা ফাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ওই দুই মহিলা নাকি জড়িত ছিল ৷ তারপরেই তিনি ওই দুই মহিলার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে আদালতে পেশ করেছেন ৷ আমরা এই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখছি ৷”
আরও পড়ুন: লেবু বেচতে হাটে গিয়ে মিথ্যে অপবাদে নির্যাতনের শিকার, দাবি মেয়ের
প্রকাশ্য হাটে ভিড়ের মধ্যে বিবস্ত্র করে দুই মহিলাকে নির্যাতন করা হচ্ছে, মালদার এই ঘটনায় চারদিকে শোরগোল পড়ে গেলেও দিনভর কার্যত ‘অজ্ঞাতবাস’ পালনের পর শনিবার রাত সাড়ে সাতটায় বামনগোলা থানায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব ৷ তিনি বলেন, “এখানে একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে৷ গতকাল বামনগোলা থানার পুলিশ সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পায়৷ তারপরেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে বামনগোলা থানার পুলিশ ৷ ভিডিয়ো ক্লিপটি ভালোভাবে পরীক্ষা করে দোষীদের চিহ্নিত করা হয়েছে ৷ ইতিমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ ধৃতদের মধ্যে তিনজন মহিলা ও দু’জন পুরুষ ৷ তারা হল মিনতি টুডু, বাসন্তী মার্ডি, রেবতী বর্মন, মনোরঞ্জন মণ্ডল ও বিজয় মণ্ডল ৷ আরও দু’জনকে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি৷ তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে ৷ পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে ধৃতদের আগামীকাল জেলা আদালতে পেশ করা হবে ৷”
আরও পড়ুন: মালদার ঘটনাকে লঘু করে দেখতে চাইছে সিপিএম, বৃন্দার মন্তব্যেও জোট-বার্তা !
পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনাটি 18 জুলাই ঘটেছিল ৷ ধৃতরা নিজেদের কৃতকর্মের কথা স্বীকার করেছে৷ তাদের একজন জানিয়েছে, তার ব্যাগ থেকে কিছু টাকা ওই দুই মহিলা চুরি করে ৷ এরপরেই ওই দুই মহিলাকে ধরে তারা মারধর করে ৷ মারধর চলাকালীন দুই মহিলার কাপড় ছিঁড়ে যায় ৷ সেখানে উপস্থিত মহিলা সিভিককর্মী ওই দুই মহিলাকে বাঁচাতে যান ৷ পরবর্তীতে সিভিক ভলান্টিয়াররাই দুই মহিলাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পাকুয়াহাট ফাঁড়িতে নিয়ে যায় ৷ একই কথা জানিয়েছে ধৃতরাও৷ কিন্তু আক্রান্ত দুই মহিলা কিংবা স্থানীয় লোকজন পুলিশে কোনও অভিযোগ জানাতে চায়নি ৷ এরপর পুলিশ তদন্ত করে পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ৷