হরিশচন্দ্রপুর (মালদা), 8 মে : হরিশ্চন্দ্রপুরে বন্যাত্রাণে দুর্নীতির অভিযোগ । এ বার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের কুশিদা গ্রামপঞ্চায়েতে (Corruption Allegations Against Kushida Gram Panchayat in 2017 Flood Relief) ৷ অভিযোগ, প্রকৃত উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে ত্রাণের টাকা ঢোকেনি ৷ পরিবর্তে সেই টাকা গিয়ে ঢুকেছে, পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী, উপপ্রধান, শাসকদলের এক পঞ্চায়েত সদস্য এবং তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্যের অ্যাকাউন্টে ৷ শুধু শাসকদলই নয়, ওই পঞ্চায়েতের তিন বিজেপি সদস্যের অ্যাকাউন্টেও ত্রাণের টাকা ঢুকেছে বলে অভিযোগ ৷
এ নিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে এলাকার সিপিএম নেতৃত্ব ৷ আর অভিযোগ দায়ের হতেই সরকারি অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছেন অভিযুক্তরা ৷ তবে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে এ বার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে জেলা সিপিএম নেতৃত্ব ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে মালদা জেলায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর ৷
প্রসঙ্গত, 2017 সালের বন্যাত্রাণ কেলেঙ্কারিতে এর আগে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি এবং বরুই গ্রামপঞ্চায়েতের নাম জড়িয়েছিল ৷ সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যে বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৎকালীন তৃণমূল প্রধান, শাসকদলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এবং এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হয়েছেন ৷ সেই ঘটনার পর ফের একই দুর্নীতির অভিযোগ উঠল একই ব্লকের অন্য একটি পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ৷ এ বার নাম জড়িয়েছে কুশিদা গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান আখতারি খাতুনের স্বামী আব্দুল রশিদ, উপপ্রধান তথা শাসকদলের অঞ্চল সভাপতি নুর আজম, পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য অলোক পোদ্দার, তাঁর স্ত্রী, ছেলে সহ তিন বিজেপি পঞ্চায়েতের সদস্যের ৷ এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে ৷
আরও পড়ুন : Mamata on TMC Factionalism : দুর্নীতি এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ মমতা, সতর্ক করলেন নেতা-কর্মীদের
ত্রাণের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ আনা সিপিএমের সারা ভারত খেত মজুর সংগঠনের জেলা কমিটির সদস্য মেরাজুল ফিরদৌস বলেন, “2017 সালে বন্যাত্রাণের টাকা নিয়ে এখানে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে ৷ কুশিদা পঞ্চায়েতে আসল ক্ষতিগ্রস্তদের নাম তালিকায় ঢোকানো হলেও, তাঁদের পরিবর্তে তৃণমূল ও বিজেপির লোকজন নিজেদের অ্যাকাউন্ট নম্বর তালিকায় দিয়ে দেয় ৷ কুশিদা গ্রামপঞ্চায়েতের যে এলাকায় বন্যা হয়েছিল, সেখানে কেউ ত্রাণের টাকা পাননি ৷ অথচ যেখানে বন্যা হয়নি, যাঁদের দোতলা-তিন তলা বাড়ি, তাঁরা ত্রাণের টাকা পেয়েছেন ৷ আমরা এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম ৷ কিন্তু প্রশাসনের কোনও হেলদোল দেখতে পাওয়া যায়নি ৷ তাই আমরা কলকাতা হাইকোর্টে এ নিয়ে নথিপত্র জমা দিয়ে এসেছি ৷ আগামী 5-7 দিনের মধ্যে হাইকোর্টে মামলা রুজু হয়ে যাবে ৷’’