মালদা, 15 ফেব্রুয়ারি : খেলার সময় ভুল করে বিষফল খেয়ে ফেলেছিল ৷ বাড়ি ফিরে নিজেদের অসুস্থতার কথা জানায় অভিভাবকদের । কিন্তু হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে গ্রামের এক ওঝার দ্বারস্থ হয় পরিবার । চলে ঝাড়ফুঁক৷ শেষপর্যন্ত চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয় দু'জনের৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরও দু’জনকে মালদা মেডিকেলে ভরতি করা হয়েছে ৷ মালদার গাজোলের কদমতলি মালঞ্চ গ্রামের ঘটনা । গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওঝাকে ৷
গতকাল বিকেলে গ্রামের চারজন সফিকুল ইসলাম (6), মহম্মদ ফিরোজ (8), কোহিনুর খাতুন (7) ও শাবনুর খাতুন (3) গ্রামের মাঠে খেলছিল৷ পাশে একটি বিষফলের গাছ ছিল । খেলার ছলে বিষফল খেয়ে ফেলে ওরা । খানিক বাদেই অসুস্থ বোধ করে । বাড়ি ফিরে সব কথা জানায় অভিভাবকদের৷ ততক্ষণে শরীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়৷ এরপরই অভিভাবকরা তাদের স্থানীয় ওঝা রফিক শেখের কাছে নিয়ে যান ৷ সেখানে ঝাড়ফুঁক চলে৷ কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে৷ মাঝ রাস্তাতেই মৃত্যু হয় ফিরোজের৷ গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় সবাইকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেলে৷ মৃত্যু হয় মহম্মদ সফিকুলেরও৷ মেডিকেলের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন কোহিনুর ও শাবনুর৷
ফিরোজের আম্মা রাশেদা বিবি বলেন, "গতকাল বিকেল 5টা নাগাদ বাড়ি ফিরে আসে ছেলে৷ তারপরই অজ্ঞান হয়ে যায়৷ কী হয়েছিল বুঝতে পারিনি৷ অস্বাভাবিক আচরণ করছিল৷ ওকে সঙ্গে সঙ্গে ঘরে নিয়ে আসি৷ সারা শরীরে তেল মাখাই৷ তখনও ছেলে কাঁপছিল৷ একসময় ছেলের শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়৷ প্রথমে ওঝার কাছে নিয়ে যাই । কিন্তু শরীর আরও খারাপ হয়ে যায় । তড়িঘড়ি গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাই৷ সেখান থেকে সদরে ছেলেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ কিন্তু ততক্ষণে ছেলে মারা গেছে । ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে আসি৷"