প্রিয় বন্ধু,
ভাস্কর চক্রবর্তীর লেখা সেই 'শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা'র হাত ধরে আমার অন্তত শীতকাল চিনতে শেখা নয় ৷ আমার প্রথম শীত এক তুলতুলে স্পর্শ ! যেন, সাইবেরিয়ার পথে ঢুকে পড়া এক শ্বেত ভল্লুক ! যে শীতের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া এক বিয়োগ ব্যথার মতো ! মা ভল্লুক যেভাবে তার বাচ্চা খুঁজতে খুঁজতে পার হয়ে গিয়েছিল সাহারা মরুভূমি, আমিও ঠিক সেভাবেই বাকি জীবনটা হারিয়ে ফেলা শীত খুঁজে বেড়িয়েছি ! গুটির ভিতর যেভাবে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকে গুটিপোকা, ঠিক সেভাবেই যেন শীত আমাকে আশ্রয় দিয়েছিল মুহূর্ত কয়েক ! আজীবন আমি খুঁজে চলি সেই শীত, সেই অনন্য শীতের আশ্রয় !
তখন আমি নরেন্দ্রপুরে পড়ি ৷ একদিন মহারাজ বললেন, অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ৷ আমার কাজ হল, একজন মানুষকে হাত ধরে সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চে তুলে দিতে হবে ৷ তাঁর দৃষ্টি আসলে স্বচ্ছ নয় ৷ আশ্রমের ছেলেরাই সেই অনুষ্ঠানের সেচ্ছাসেবক ৷ অন্যরা অনেকেই নানা ধরনের সব কাজ পেয়েছে ৷ যেমন, অতিথিদের আপ্যায়ন করা, মঞ্চের টুকটাক নানা কাজ ৷ কিন্তু, আমার কাজ জৌলুসহীন ৷ কেবল অন্ধকারে একটি মানুষকে মঞ্চে এগিয়ে দেওয়া ! আর তাই মনখারাপ নিয়ে সামনের সারিতে বসে ছিলাম আমি ৷
আরও পড়ুন:'বন্ধু শীত, যাওয়ার আগে একবার ফিরে তাকিও ধরিত্রীর দিকে...'