প্রিয় দেবু,
শীতকালীন ঠান্ডা (Winter Memories) আস্তরণ আর কুয়াশার খুনসুটির সকাল মনে পড়ছে ভীষণ । বাড়ির উঠোনে লাউ, কুমড়ো, পুঁই, উচ্ছেলতার হলদে ফুলের নীচে বিড় বিড় নতুন চুলের মতো লাল শাক, পালং শাকের ভীড় । আমরা ছুটছি, দুটো ট্রাই সাইকেল ছুটছে । একটা সবুজ অন্যটা লাল । তোর সাইকেলের রঙ ছিল লাল । পাশাপাশি বাড়ি, মাঝে কোনও হুড়কো দেওয়া বা বাঁশের আগলও ছিল না । কোথায় কুয়াশাকে ভয় পেতাম বড়দের মতো ? শুধু সন্ধের জমাট ভীড় আগুনের ধার গুটিশুটি হাত ধরাধরি বসে থাকা...মনে আছে তোর ?
কবে যেন কোন শীতেই দুজনের স্বপ্নের মাঝখানেই সাইকেলটা হয়ে গেল তোর লালরঙা বাইক, ছুটছিস । পিছন থেকে তোর চলে যাওয়া দেখে শীত কুয়াশা আমার চোখ ভিজিয়েছিল ৷ মনে মনে অভিমান করে বলেছিলাম, ফিরে এলে আর তোর সামনে দাঁড়াব না ।...সত্যিই আর দাঁড়াতে হল না দেখ্ । এলিনা তুই । আমি চলে যাচ্ছি ৷ সেই শাকসবজির উঠোন জুড়ে বিরাট মণ্ডপ । তোরণে নহবত । অন্য কোথাও হেঁটে যাচ্ছি । পাহাড়ী শীত তোকে তো টেনে নিয়েছে কবেই ৷ কোন মেঘের দেশে ধসের ভিতর পড়েছিল তোর লাল বাইকটা...তোকে আর খুঁজে পায়নি কেউ । বুকের ক্ষত আরও গভীর করে নির্ণিমেষ ঠান্ডা বাতাস উত্তাল ঢেউ হয়ে ঢুকে পড়ছে কেবল ৷ ভীষণ দেখতে ইচ্ছে করছে তোকে ৷ এ গোপন ইচ্ছে এই লাল বেনারসির আড়াল থেকে কাকে আর জানাব বল্ । অক্ষর হোক রানার । মেঘের দূত হয়ে সে-ই পৌঁছক তোর কাছে । আমার গন্ধটুকু পাঠানো থাক । যে লাল ট্রাউজার আর সোয়েটার তোর পছন্দের ছিল সেই গরম ওমটুকু পাঠালাম ।