কলের যন্ত্রাংশ চেয়ে টুইট পুলিশকে, লকডাউন হাসিমুখে সামলাচ্ছে লালবাজার - বিভিন্নভাবে মানুষকে সাহায্য করে চলেছে লালবাজার
জলের কল খারাপ । লকডাউনে পাওয়া যায়নি মিস্ত্রি বা কলের যন্ত্রাংশ । যার জন্য এবার কলকাতা পুলিশকে টুইট করে সাহায্য চাইলেন এক মহিলা । টুইট পেয়েই কলকাতা পুলিশও সাহায্য করলেন তাঁকে ।
কলকাতা, 10 এপ্রিল : ছেলে পুত্রবধূ নাতি-নাতনি নিয়ে বিদেশে থাকেন । কলকাতায় রয়ে গেছেন বৃদ্ধ বাবা-মা । তাঁদের নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত নেই ছেলের । বৃদ্ধ বাবা মা'র জন্য সাহায্য চেয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জায়গা থেকে টু্ইট করছেন ছেলে-মেয়েরা । পুলিশ তৎক্ষণাৎ তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন । কারও পাসপোর্ট রিনিউ হচ্ছে না । কলকাতা পুলিশকে টু্ইট । আবারও পাশে পুলিশ । এবার কলের জলের কলের যন্ত্রাংশ আর মিস্ত্রিও খুঁজতে হল পুলিশকে । হাসিমুখে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলিধর শর্মা বাড়িয়ে দিলেন সাহায্যের হাত । হ্যাঁ, এমনভাবেই এখন কলকাতাবাসীকে সাহায্য করছে কলকাতা পুলিশ ।
লকডাউন ভেঙে অনেকেই বাড়ি বাইরে বেরচ্ছেন । কারণে - অকারণে । সামলাতে হচ্ছে পুলিশকে । শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে চালাতে হচ্ছে নাকা চেকিং । 24 ঘণ্টায় সেখানে ডিউটি দিতে হচ্ছে পুলিশ কর্মীদের । বাজারে অতিরিক্ত ভিড় ? হাজির হতে হচ্ছে পুলিশকে । রেশন দোকানের লাইনে যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে নজর রাখতে হচ্ছে সেদিকে । কলকাতাবাসীর মনোরঞ্জনে গাওয়া হচ্ছে গান । ক্ষুধার্তকে দেওয়া হচ্ছে অন্ন । শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে ইনডোর গেমস কিংবা স্ক্র্যাপ বুক । মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে রেশন । পথ কুকুরদের কথা ভেবে ব্যবস্থা করতে হচ্ছে খাবারের । কোথাও কোথাও আবার বাড়ির বাজার পৌঁছে দেওয়ার কাজও । এসবেই শেষ নয় । কোরোনা আতঙ্কের মাঝে রুখতে হচ্ছে গুজব ফেক নিউজ়ের রমরমা । হ্যাঁ, এই সেই কলকাতা পুলিশ । লকডাউনের প্রথম দিনে শহরবাসীকে বোঝাতে গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে গেলেও যাকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় । বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যায় পড়ে মার পর্যন্ত খেতে হয় পুলিশকে । কোরোনা সংক্রমণে মৃতের দেহ দাহ করতে গিয়ে সম্মুখীন হতে হয় ইট-বৃষ্টির । সেই পুলিশকেই এবার মেটাতে হল কলের মিস্ত্রির আবদার।
নীতা কর্মকার নামে মহিলার অবশ্য দোষ নেই । লকডাউনের জেরে সবই বন্ধ হয়ে রয়েছে যে । ওই মহিলা জানিয়েছেন তিনি প্রথমে চেষ্টা করেছিলেন । সল্টলেক, বউবাজার, কাঁকুরগাছির মতো এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছিলেন যদি পাওয়া যায় কোনও দোকান । এদিকে খারাপ হয়ে যাওয়া কল থেকে অনবরত জল পড়ছে । দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে তিনি সেটাও মানতে পারছেন না । কারণ, জলের অপচয় হোক সেটা চান না তিনি । মরিয়া হয়ে তিনি টুইট করেন কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এবং মুরলীধর শর্মাকে । মহিলার পাশে দাঁড়ায় কলকাতা পুলিশ । মুরলিধর শর্মা জানতে চান, তাঁর নাম-ঠিকানা পরিচয় । সমস্যা মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন পুলিশ কর্মীদের ।