কলকাতা, 7 অগস্ট: রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীদের রাজ্য স্বাস্থ্য প্রকল্প (ওয়েস্ট বেঙ্গল হেল্থ স্কিম)-এর আওতায় কেন আনা হয়নি, এই বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইল হাইকোর্ট। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। আট সপ্তাহ পর মামলার পরবর্তী শুনানি।
রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের কর্মী-অফিসারদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আধিকারিকদের রাজ্য স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় রাখা হলেও ব্যতিক্রম গ্রুপ-বি, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীরা। বাধ্য হয়ে বঞ্চনার অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে তাদের সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী শিক্ষাকর্মী বা নন-টিচিং স্টাফদের জন্য রাজ্য সরকার থেকে স্বাস্থ্যসাথী স্কিম চালু করা হয়েছিল 2017 সালে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় এই স্বাস্থ্য সাথী স্কিম চালু করেনি। পরবর্তীতে 2018 সালে উচ্চশিক্ষা দফতর তার অধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এবং পরে কৃষি দফতরের অধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের শিক্ষক ও অফিসারদের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারী কর্মচারী ও অফিসারদের অনুরূপ ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিম চালু করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী কর্মচারীদের স্বাস্থ্যসাথী স্কিমের আওতায় আনা হয় তাদের বেতন থেকে মাসিক যে চিকিৎসা ভাতা পায় তার বিনিময়ে। এক্ষেত্রে চিকিৎসা ভাতার বদলে শিক্ষকরা পাচ্ছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিম-এর সমগোত্রীয় স্কিম, কিন্তু শিক্ষাকর্মীরা পাচ্ছেন স্বাস্থ্যসাথী স্কিম। এই বৈষম্য দূর করে সরকার যাতে শিক্ষাকর্মীদের জন্যও সরকারি হেলথ স্কিম-এর অনুরূপ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, অফিসার থেকে শুরু করে শিক্ষাকর্মী পর্যন্ত সমস্ত স্তরের স্থায়ী কর্মচারীদের জন্যে এক রকম চিকিৎসার সুবিধাপ্রাপ্ত স্কিম চালু করে ৷ সেই উদ্দেশেই এই মামলা দায়ের হয় বলে জানা গিয়েছে। সংগঠনের তরফে মামলা দায়ের করেন পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সংঘের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত মজুমদার।
Calcutta High Court: বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা কেন স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় নেই ? রাজ্যকে প্রশ্ন হাইকোর্টের - বিচারপতি কৌশিক চন্দ
Calutta High Court on State Health Scheme: রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কর্মচারীদের কেন ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিমের আওতায় আনা হয়নি, প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট ৷
আরও পড়ুন: বিভিন্ন জেলায় বোর্ড গঠনের আগে নিরাপত্তার দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ বিরোধী বিজয়ী প্রার্থীরা
বিচারপতি কৌশিক চন্দের সিঙ্গেল বেঞ্চে সোমবার মামলার শুনানি হয়। যেহেতু বিষয়টা সরকারের নীতি নির্ধারণ বিষয়ক, সে কারণে বিচারপতি সরকারপক্ষের আইনজীবীকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে হলফনামা জমা দিতে বলেছেন। পরবর্তী দু'সপ্তাহের মধ্যে আবেদনকারীকে হলফনামা দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় রাজ্যের 30টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার কর্মচারী ও পেনশনভোগীর বিষয় জড়িয়ে আছে বলে দাবি সংগঠনের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিমের বাইরে রেখে যে বৈষম্য রাখা হয়েছে, এই মামলার মাধ্যমে সেই বৈষম্য দূর হয়ে একটা দিশা নির্ধারিত হবে বলে আশা প্রকাশ করছে ভারতীয় মজদুর সংঘ অনুমোদিত পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সংঘ।