কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর : রাজীব কুমারের গ্রেপ্তারির উপর ফের স্থগিতাদেশ বিচারপতি মধুমতী মিত্রের । আগামীকাল হবে শুনানি । আর তা নিয়েই মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আইনজীবী ওয়াই জ়েড দস্তুর । কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে যখনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে, তখনই তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দিয়েছেন । দাবি আইনজীবী দস্তুরের । তিনি বলেন, "প্রথমবার 2017 সালে যখন রাজীব কুমারকে সমন পাঠানো হয়েছিল, তিনি এক মাস সময় চেয়ে নেন । কারণ হিসেবে তিনি দুর্গাপুজো ও ছটপুজো সংক্রান্ত ব্যস্ততা দেখান । কিন্তু তারপর যখন তাঁকে চিঠি দিয়ে ডাকা হল, সঙ্গে সঙ্গে CBI দোষী?"
আইনজীবী দস্তুর আরও বলেন, "গত মাসে রাজীব কুমারকে যখন রোজ়ভ্যালি চিটফান্ড সংক্রান্ত ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হল, তিনি অজুহাত দিলেন যে কাশ্মীর থেকে 370 ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে । আর তার ফলে নাকি দেশের আইন-শৃঙ্খলার উপর প্রভাব পড়তে পারে । এই কারণে তিনি ফের 1 মাস সময় চেয়ে নিলেন ।" দস্তুর জানান, রাজীব কুমারের আইনজীবী মিলন মুখার্জি বারবার বলার চেষ্টা করেছেন যে তিনি একজন সাক্ষী । তাঁকে দোষীসাব্যস্ত করার চেষ্টা করছে CBI । সেপ্রসঙ্গে CBI-এর আইনজীবীর বক্তব্য, "কাকে একজন সাক্ষী বলা হয়? যে কিছু দেখেছে, কিছু শুনেছে বা জানে । অথচ রাজীব কুমারের কাছে CBI যখনই কিছু জানতে চেয়েছে তার উত্তরে তিনি বলেছেন আমি কিছু জানি না । কিছু দেখিনি এবং কিছু শুনিনি ।"
ওয়াই জ়েড দস্তুরের দাবি, "বারবার রাজীব কুমারের আইনজীবী বলেছেন, 150 জন তদন্তকারী অফিসারদের মধ্যে বেছে বেছে রাজীব কুমারকেই CBI জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকছে । কিন্তু একথা সঠিক নয় । একাধিক পুলিশ আধিকারিককে ডাকা হয়েছে । ADG, সাব ইন্সপেক্টর থেকে শুরু করে CP-কে পর্যন্ত ডাকা হয়েছে ।" দস্তুরের অভিযোগ, "রাজীব কুমারকে যখন CGO কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠানো হল, তখন তিনি না এসে আলিপুর CJM-এর কাছে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেন ।" আইনজীবী বলেন, "রাজীব কুমার SIT-র দায়িত্বে ছিলেন । তাঁর কাছে CBI যখন নথি চাইল, তিনি আট ট্রাঙ্ক কাগজপত্র পাঠালেন ।" দস্তুরের প্রশ্ন, "এই সমস্ত নথি শ্যামল সেন কমিটিকে কেন দেওয়া হয়নি?" এপ্রসঙ্গে দস্তুর বলেন, "শ্যামল সেন কমিটি 286 কোটি টাকা, প্রতারিত আমানতকারীদের ফেরত দেওয়ার জন্য রাজ্যকে দিল । কিন্তু রাজ্য মাত্র 148 কোটি বণ্টন করে বাকিটা ফেরত দিয়ে দিল । এদিকে রাজীব কুমার একাধিকবার অভিযোগ করেছেন যে CBI নাকি এই ব্যাপারে গুরুত্ব না দিয়ে তার পিছনে লেগে আছে!"
প্রসঙ্গত, রাজীব কুমারের মতো আরও একজন পুলিশ অফিসার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন CBI তাঁকে হেনস্থা করছে বলে । কিন্তু তিনি CBI-র সঙ্গে দেখা করেছিলেন । CBI-র আইনজীবী ওয়াই জ়েড দস্তুরের প্রশ্ন, "রাজীব কুমারের মতো একজন সম্মানীয় পুলিশ অফিসার পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কেন? নিশ্চয় কোনও সমস্যা রয়েছে ।" তাঁর মতে, "দেবযানীকে গ্রেপ্তারের পর রাজীব কুমারই পরীক্ষা করেছিলেন । তদন্তের ব্যাপারে রাজীব কুমার যদি তথ্য না দেন, CBI কোথা থেকে তথ্য পাবে?"