কলকাতা, 4 সেপ্টেম্বর : চরম অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে চলেছে রাজ্যের দূরশিক্ষা ব্যবস্থা । কারণ পড়ুয়া ভরতি নিয়ে তারা কীভাবে এগোবে তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছ থেকে কোনও গাইডলাইন পায়নি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি । এমনকী 2021-এ দূরশিক্ষায় পড়ুয়া ভরতি করতে পারবে কি না তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ডিসটেন্স এডুকেশন বিউরোর (DEB) কাছ থেকে এখনও কোনও বার্তা পায়নি ।
মেলেনি UGC-র গাইডলাইন, অনিশ্চয়তার মুখে রাজ্যের দূরশিক্ষা ব্যবস্থা - অনিশ্চয়তায় পশ্চিমবঙ্গের দূরশিক্ষা ব্যবস্থা
সাস্কেল 4-এর মধ্যে 3.26 বা তার উপর NAAC গ্রেড থাকলে তবেই দূরশিক্ষার মাধ্যমে কোর্স অফার করতে পারবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি । এমনটাই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল 2018 সালে । 2019-2020 শিক্ষাবর্ষে তা থেকে পশ্চিমবঙ্গকে ছাড় দেওয়া হয় । তবে 2021-এ কীভাবে পড়ুয়াদের ভরতি করা হবে তা নিয়ে কোনও গাইডলাইন পায়নি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গের দূরশিক্ষা ব্যবস্থা অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়েছিল 2018 সালে । স্কেল 4-এর মধ্যে 3.26 বা তার উপর NAAC গ্রেড থাকলে তবেই দূরশিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে কোর্স অফার করতে পারবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি । এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নতুন গাইডলাইন জারি করা হয় । সেই সময় পশ্চিমবঙ্গকে ছাড় দেয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক । তাদের তরফে জানানো হয়, 2019-20 শিক্ষাবর্ষের আগে DEB-র গাইডলাইন পশ্চিমবঙ্গে জারি করা হবে না । দূরশিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে রাজ্যের এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন , "যদি 3.26 স্কোর জারি করা হয় তাহলে নেতাজি সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটি ছাড়া অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয় দূরশিক্ষা ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে পারবে না । কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দেখানো হচ্ছে যে 3.01 স্কোর থাকলেও দূরশিক্ষা ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়া যাবে । কিন্তু তা নিয়ে এখনও DEB-র তরফে কোনও সরকারি নির্দেশিকা আসেনি । তাই রাজ্যের মুক্ত ও দূরশিক্ষা ব্যবস্থা বর্তমানে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে ।"
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে রবীন্দ্রভারতী, বর্ধমান , উত্তরবঙ্গ, কল্যাণী এবং বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে স্নাতকোত্তর স্তরেও কোর্স করানো হয় । রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সবথেকে বেশি দূরশিক্ষার পড়ুয়া আসেন । প্রতি বছর প্রায় 20 হাজার পড়ুয়া ভরতি হন । সাধারণত প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগেই দূরশিক্ষা ব্যবস্থায় পড়ুয়া ভরতির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যায় ।
নেতাজি সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটিতে প্রতি বছর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে প্রায় 1.25 লাখ পড়ুয়া পরীক্ষা দেন । এবছর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী , বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের গাইডলাইন মেনে সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা নিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয় । নেতাজি সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য শুভশংকর সরকার বলেন, "আমরা শীঘ্রই আমাদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক করব । চূড়ান্ত সেমেস্টারের পড়ুয়াদের মূল্যায়নের জন্য বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার জন্য এই বৈঠক করা হবে । এই বিকল্প মূল্যায়নের পদ্ধতি এমনভাবে ঠিক করতে হবে যা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন দ্বারা স্বীকৃত হবে ।"
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নেতাজি সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটির 150টি স্টাডি সেন্টার রয়েছে যেগুলি পুরো সেপ্টেম্বর মাস বন্ধ থাকবে । অক্টোবরে যখন কলেজগুলি খুলবে তখন কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যাকলগ ক্লিয়ার করায় ব্যস্ত থাকবে । ফলে রবিবার ছাড়া স্টাডি সেন্টারগুলি ব্যবহার করার সুযোগ খুবই কম থাকবে । এই বিষয়ে শুভশংকর সরকার বলেন, "অক্টোবরের মধ্যে প্রথাগত পদ্ধতিতে স্টাডি সেন্টারে এত পড়ুয়ার পরীক্ষা নেওয়া কার্যত অসম্ভব ।"