মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষার বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করল রাজ্য

স্কুল শিক্ষা নিয়ে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের বৈঠকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দপ্তর । কোরোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে শিক্ষার অবস্থা কী তা স্পষ্ট করা হয়েছে গতকালের এই বৈঠকে ।

কলকাতা, 29 এপ্রিল : মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকের বৈঠকে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করল পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দপ্তর । গতকাল সব রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক । সেই বৈঠকে শিক্ষা নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দপ্তর । বৈঠকে স্কুল শিক্ষার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে । বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের শিক্ষার বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি । কোরোনা আবহে স্কুল শিক্ষা নিয়ে রাজ্য কোন পরিস্থিতিতে রয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়েছে গতকালের বৈঠকে । মি-ডে মিল, সমগ্র শিক্ষা মিশন, শিক্ষাবর্ষ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ।

কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ডঃ রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক ও মন্ত্রকের অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের তরফ থেকে শিক্ষা দপ্তরের তিন আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন । শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, বৈঠকে MHRD মন্ত্রী ও আধিকারিকরা রাজ্যগুলির বক্তব্য শুনেছেন । তবে, তাঁরা কোনও মন্তব্য করেননি ।

বৈঠক প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "প্রত্যেকটি রাজ্যের অবস্থান, মূলত বিদ্যালয় শিক্ষার ক্ষেত্রে তারা কী করছে, সমগ্র শিক্ষা মিশন, মিড-ডে মিল ও শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডার নিয়ে আলোচনা হয়েছে । আমাদের বিদ্যালয় শিক্ষায় কোনও অসুবিধা নেই । তার কারণ, আমাদের শিক্ষাবর্ষ হয় জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত । ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা জানিয়েছি, প্রি-প্রাইমারি থেকে ক্লাস এইট পর্যন্ত কাউকে ডিটেনশন করা যাবে না । তাদেরকে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করে দিতে বলা হয়েছে । ক্লাস ইলেভেনের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছি । ক্লাস নাইন থেকে টেনের পরীক্ষার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে । পরবর্তী সময়ে এই ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা জানানো হবে ।"

বৈঠকে বোর্ড পরীক্ষার ভবিষ্যৎ, বিশেষত যেখানে পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে সেই নিয়ে আলোচনা হয়েছে । শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "আমাদের ক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে । তা নিয়ে কোনও মন্তব্য MHRD করেনি ।"

অন্যদিকে মিড-ডে মিলের বরাদ্দ নিয়ে বৈঠকে রাজ্যের তরফে কিছু দাবি জানানো হয়েছিল । বলা হয়েছিল, প্রাথমিকের প্রতি পড়ুয়া পিছু 10 টাকা ও উচ্চপ্রাথমিকের প্রতি পড়ুয়া পিছু 12 টাকা করে বরাদ্দ করা হোক । কিন্তু, রাজ্যের সেই দাবি মানা হয়নি বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । যদিও 14 এপ্রিল 2020-'21 শিক্ষাবর্ষে মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দ বাড়িয়েছে কেন্দ্র । এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "আমাদের দাবি ছিল প্রাথমিকে ছাত্রপিছু 10 টাকা, উচ্চ প্রাথমিকে 12 টাকা মিড-ডে মিলের খরচ বাবদ দিতে হবে । সেটা তারা করেনি । তবে, ক্লাস ওয়ান থেকে ফোর পর্যন্ত আমরা যেখানে প্রতি পড়ুয়াপিছু পেতাম 4 টাকা 41 পয়সা সেটাকে বাড়িয়ে করা হয়েছে 4 টাকা 97 পয়সা । ক্লাস ফাইভ থেকে এইট পর্যন্ত আমরা বর্তমানে যেটা পাই সেটা হচ্ছে 6 টাকা 71 পয়সা । এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে 7 টাকা 45 পয়সা । যদিও, আমরা চেয়েছিলাম 10 টাকা এবং 12 টাকা ।"

অন্যান্য যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "সমগ্র শিক্ষা মিশন নিয়ে ওঁরা বলেছেন । গতবার আমাদের যে অ্যালটমেন্ট ছিল সেই বরাদ্দের 5 শতাংশ খুব সম্ভবত তাঁরা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব দেবেন । পাশাপাশি মিড-ডে মিলের রাঁধুনি ও সহায়কদের ভাতা অত্যন্ত কম বলে আমরা লিখে পাঠিয়েছিলাম রাজ্যের তরফে । আমাদের দাবি ছিল, তাঁদের ভাতা আরও এক হাজার টাকা করে বৃদ্ধি করা হোক । সে ব্যাপারে তাঁরা শুনেছেন । কিন্তু, কোনও কিছুই বলেননি ।"