পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

ডাক্তারদের কর্মবিরতি উঠুক; বলছে শাহিদের পরিবার

আমাদের কোন ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমা করে দেবেন । দয়া করে আন্দোলন প্রত্যাহার করুন । আবেদন NRS-এ মৃত শাহিদের পরিবারের ।

শাহিদের পরিবার

By

Published : Jun 14, 2019, 10:37 PM IST

Updated : Jun 15, 2019, 12:40 AM IST

কলকাতা, 14 জুন : রোগীমৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমারকাণ্ড । NRS হাসপাতালের মধ্যেই 'বহিরাগত'-দের হাতে আক্রান্ত জুনিয়র ডাক্তাররা । যার জেরে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা শিকেয় । মুখ্যমন্ত্রী গেছিলেন SSKM হাসপাতালে । হুঁশিয়ারি দিয়ে ফিরে আসেন । ফলে আরও জটিল হয়েছে পরিস্থিতি । এই অবস্থায় দু'পক্ষই অনড় । জুনিয়র ডাক্তাররা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসে দেখা করলে কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হবে । আন্দোলনে পাশে পেয়েছেন ফিরহাদ-কন্যা, কাকলি-পুত্রকেও । এমন কী, মমতার ভাইপো আবেশও জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিলে পা মিলিয়েছেন । কিন্তু, কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল যার জন্য প্রায় 96 ঘণ্টা ধরে কর্মবিরতি পালন করতে হচ্ছে চিকিৎসকদের ? কেন গণইস্তফা দিচ্ছেন তাঁরা ? যে রোগীর মৃত্যু হয়েছে তাঁর পরিবারই কী বলছে ?

আজ ETV ভারতের প্রতিনিধি গেছিলেন মহম্মদ শাহিদের বাড়ি । মহম্মদ শাহিদ । বয়স 75 । বাড়ি ট্যাংরার বিবিবাগান জামা মসজিদ এলাকায় । রবিবার দুপুরে বুকে ব্যথা নিয়ে তাঁকে ভরতি করা হয় NRS হাসপাতালে । শুরু হয় চিকিৎসা । শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় হঠাৎই । সোমবার বিকেলের দিকে মৃত্যু হয় তাঁর । শাহিদের জামাই মনসুর আলমের দাবি, ভুল ইঞ্জেকশন প্রয়োগে আব্বার মৃত্যু হয়েছে । মনসুর বলেন, "আব্বার মৃত্যুর খবর পেয়েই ভিড় জমতে শুরু করে । পাড়া থেকে লোকজন আসে । কয়েকজন অশ্লীল মন্তব্যও করে ।" তাঁর কথায়, এরপরই ক্ষুব্ধ হন জুনিয়র ডাক্তাররা । তাঁরা ক্ষমা চাইতে বলেন । নাহলে মৃতদেহ ছাড়া হবে না বলে জানিয়ে দেন । মনসুরের দাবি, তাঁরা 100 জন মিলে ক্ষমা চান । কিন্তু, ডাক্তাররা বলেন, যারা অশ্লীল মন্তব্য করেছে, তাদের ক্ষমা চাইতে হবে । তর্কাতর্কি চলতে থাকে । এরপরই শুরু হয় হাঙ্গামা । লাঠি, রড দিয়ে পেটানো হয় জুনিয়র ডাক্তারদের । মাথা ফাটে জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখার্জির । ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় পাঁচজনকে । তাদের নাম অবশ্য প্রকাশ্যে আসেনি । প্রশ্ন উঠছে, আদৌ জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তো ? একাধিক মহল প্রশ্ন তুলছে, "200 জন মিলে হামলা চালাল । তাহলে 5 জনকে গ্রেপ্তার করে কী লাভ ? কোন পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাও কেউ জানে না ।"

ভিডিয়োয় শুনুন মনসুর আলমের বক্তব্য

বর্তমানে পরিস্থিতি জটিল । চিকিৎসকরা নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন । দেখতে দেখতে কেটে গেছে চারদিন । একাধিক, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের পরিষেবা এখনও স্তব্ধ । জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন চিকিৎসকরাও । একাধিক মহল বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হতে পারত । তিনি এসেছিলেন SSKM হাসপাতালে । তবে, তাঁর রণংদেহী মেজাজ আগুনে ঘি ঢেলেছে । হুঁশিয়ারিতে আরও জোটবদ্ধ হয়েছেন ডাক্তাররা ।

এদিকে, মনসুরের বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার, হাসপাতাল চত্বরে 100-রও বেশি লোক হাঙ্গামা চালিয়েছিল । তারপরও তারা ক্ষমা চাইল ? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য ? ক্ষমা চাওয়ার পর ডাক্তারকে মারা হল কেন ? মনসুর বলছেন, "আমরা ডাক্তারকে মারতে চাইনি । কোনওরকমে লেগে গেছে ।"

হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও চিন্তায় শাহিদের পরিবার । মহম্মদ শাহিদের মেয়ে সাহিমা বললেন, "আমাদের কিছু ভুল হয়ে থাকলে আমরা ক্ষমা চাইছি । চাই, মানুষ যেন কষ্ট না পায় । ডাক্তাররা কর্মবিরতি তুলে নিন । তবে, আব্বার মৃত্যুর বিচারও চাই ।"

ডাক্তারদের উপর হামলার নিন্দা সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল । তাঁদের আন্দোলন নিয়েও জোর চর্চা চলছে সোশাল মিডিয়ায় । দেশব্যাপী চিকিৎসক সংগঠন বাংলার জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়িয়েছে । আর জুনিয়র ডাক্তাররা বলছেন, "একবার মুখ্যমন্ত্রী এসে অনুরোধ করলেই হত ।" এক মত নেটিজেনদেরও ।

Last Updated : Jun 15, 2019, 12:40 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details