কলকাতা, 14 জুন : রোগীমৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমারকাণ্ড । NRS হাসপাতালের মধ্যেই 'বহিরাগত'-দের হাতে আক্রান্ত জুনিয়র ডাক্তাররা । যার জেরে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা শিকেয় । মুখ্যমন্ত্রী গেছিলেন SSKM হাসপাতালে । হুঁশিয়ারি দিয়ে ফিরে আসেন । ফলে আরও জটিল হয়েছে পরিস্থিতি । এই অবস্থায় দু'পক্ষই অনড় । জুনিয়র ডাক্তাররা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজে এসে দেখা করলে কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হবে । আন্দোলনে পাশে পেয়েছেন ফিরহাদ-কন্যা, কাকলি-পুত্রকেও । এমন কী, মমতার ভাইপো আবেশও জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিলে পা মিলিয়েছেন । কিন্তু, কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল যার জন্য প্রায় 96 ঘণ্টা ধরে কর্মবিরতি পালন করতে হচ্ছে চিকিৎসকদের ? কেন গণইস্তফা দিচ্ছেন তাঁরা ? যে রোগীর মৃত্যু হয়েছে তাঁর পরিবারই কী বলছে ?
আজ ETV ভারতের প্রতিনিধি গেছিলেন মহম্মদ শাহিদের বাড়ি । মহম্মদ শাহিদ । বয়স 75 । বাড়ি ট্যাংরার বিবিবাগান জামা মসজিদ এলাকায় । রবিবার দুপুরে বুকে ব্যথা নিয়ে তাঁকে ভরতি করা হয় NRS হাসপাতালে । শুরু হয় চিকিৎসা । শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় হঠাৎই । সোমবার বিকেলের দিকে মৃত্যু হয় তাঁর । শাহিদের জামাই মনসুর আলমের দাবি, ভুল ইঞ্জেকশন প্রয়োগে আব্বার মৃত্যু হয়েছে । মনসুর বলেন, "আব্বার মৃত্যুর খবর পেয়েই ভিড় জমতে শুরু করে । পাড়া থেকে লোকজন আসে । কয়েকজন অশ্লীল মন্তব্যও করে ।" তাঁর কথায়, এরপরই ক্ষুব্ধ হন জুনিয়র ডাক্তাররা । তাঁরা ক্ষমা চাইতে বলেন । নাহলে মৃতদেহ ছাড়া হবে না বলে জানিয়ে দেন । মনসুরের দাবি, তাঁরা 100 জন মিলে ক্ষমা চান । কিন্তু, ডাক্তাররা বলেন, যারা অশ্লীল মন্তব্য করেছে, তাদের ক্ষমা চাইতে হবে । তর্কাতর্কি চলতে থাকে । এরপরই শুরু হয় হাঙ্গামা । লাঠি, রড দিয়ে পেটানো হয় জুনিয়র ডাক্তারদের । মাথা ফাটে জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখার্জির । ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় পাঁচজনকে । তাদের নাম অবশ্য প্রকাশ্যে আসেনি । প্রশ্ন উঠছে, আদৌ জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তো ? একাধিক মহল প্রশ্ন তুলছে, "200 জন মিলে হামলা চালাল । তাহলে 5 জনকে গ্রেপ্তার করে কী লাভ ? কোন পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাও কেউ জানে না ।"
বর্তমানে পরিস্থিতি জটিল । চিকিৎসকরা নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন । দেখতে দেখতে কেটে গেছে চারদিন । একাধিক, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের পরিষেবা এখনও স্তব্ধ । জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন চিকিৎসকরাও । একাধিক মহল বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হতে পারত । তিনি এসেছিলেন SSKM হাসপাতালে । তবে, তাঁর রণংদেহী মেজাজ আগুনে ঘি ঢেলেছে । হুঁশিয়ারিতে আরও জোটবদ্ধ হয়েছেন ডাক্তাররা ।