কলকাতা,14 এপ্রিল: ক্যানসারকে হারিয়ে জীবনের পথে নয়া দৌড় শুরু করার মুখে আট বছরের অরণ্যতেশ গঙ্গোপাধ্যায় । শ্রীরামপুরের এই খুদে এক বছর আগে মস্কোতে দ্য ওয়ার্ল্ড উইনার চিলড্রেন গেমসে সাফল্য ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে । বিশ্বের নানা প্রান্তে ক্যানসার জয়ী বাচ্চাদের নিয়ে রাশিয়ার রাজধানীতে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় এই প্রতিযোগিতা । ছটা ইভেন্টে ছয় থেকে চোদ্দ বছরের বাচ্চারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে থাকে । সেখানে বাংলার মুখ ছিল একমাত্র অরণ্যতেশ । দাবা, সাঁতার, টেবিল টেনিস এবং শুটিংয়ে নজরকাড়া পারফরমেন্স করেছে সে । বিশেষ করে দশ মিটার এয়ার রাইফেলে পারফরমেন্স দেখে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে পরিবার ।
অরণ্যতেশের আত্মবিশ্বাস, খুব তাড়াতাড়ি কোরোনার সঙ্গে লড়াইয়েও জয় হবে । একসঙ্গে লড়াই করে সবার জয় হবে । আর তার এই আত্মবিশ্বাসের নেপথ্যে রয়েছে ব্লাড ক্যানসারের বিরুদ্ধে জয় । নিজে যাবতীয় বিধিনিষেধ মেনে চলছে । সবার কাছে সচেতনতা মেনে চলার আবেদন করছে ছোট্টো অরণ্যতেশ ।
"2016 সালে অরণ্যতেশের ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়েছিল । মধ্যবিত্ত সংসারে ক্যানসারের থাবা, দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম । তবে সাহস হারাইনি ।" বলছিলেন অরণ্যতেশের মা কাবেরী গঙ্গোপাধ্যায় । মুম্বইয়ের টাটা ক্যানসার হাসপাতাল তাঁদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ছিল । পাশে দাঁড়িয়েছিল দ্য ইমপ্যাক্ট নামের মুম্বাইয়ের একটি NGO। এই NGO-র সাহায্যে গত জুলাই মাসে মস্কোর গ্লোবাল মিটে সুযোগ পেয়েছিল অরণ্যতেশ । মাঝে একটা বছর প্রায় অতিক্রান্ত । বছরের প্রায় শুরুতেই দেশে থাবা বসিয়েছে কোরোনা ভাইরাস । এর থেকে রেহাই পাওয়া দায় হয়ে পড়েছে বিশ্ববাসীর কাছে । অব্যর্থ দাওয়াইয়ের খোঁজ নেই । সচেতনতাই পরিত্রাণের প্রাথমিক পথ । নিয়ম মেনে হাত ধোওয়া, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করা, মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার কথা দেশ ও রাজ্য সরকার বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষের নজরে নিয়ে আসছে । কিন্তু বারবার প্রচার সত্ত্বেও কান দিচ্ছেন না অনেকেই । মানছেন না সতর্কতা । বুঝতে পারছেন না নিজেদের অসতর্কতাই কত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে । বড়দের এই অসচেতনতা দেখে ছোট্টো অরণ্যতেশও অবাক । "2016 সাল থেকে আমি এই নিয়ম মেনে আসছি । তাতে সুফল মিলেছে । আমি যদি পারি তোমরাও পারবে ।" স্নেহ ও শাসনের সুর ছোটো ছেলেটির গলায় ।