কলকাতা, 28 এপ্রিল : খুলতে না খুলতেই ফের বন্ধ স্কুলের দরজা ৷ 2 মে থেকে স্কুলগুলিতে গরমে ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার ৷ এই মুহূর্তে দারুণ দাবদাহে পুড়ছে রাজ্য । এই পরিস্থিতিতে ছোট ছোট বাচ্চাদের কথা ভেবে এগিয়ে আনা হয়েছে গরমে ছুটি ৷ যা নিয়ে নানামুনির নানা মত ৷ যদিও শিক্ষকদের একাংশের মতে, আরও কিছুদিন স্কুল চলার পর গরমের ছুটি পড়লে ভাল হত । কারণ দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার পর সবে ছন্দে ফিরছিল স্কুলগুলি ৷ সকাল হতেই স্কুলের যাওয়ার তাড়া, সহপাঠীদের সঙ্গে খুনসুটি, ক্লাসরুমে বসে পড়াশোনার অভ্যাস ফিরে আসছিল ৷ এই অভ্যাসে ফের ছেদ পড়বে ৷ তাও আবার প্রায় দেড় মাসের মতো ৷ শিক্ষকরা বলছেন, হুট করে গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে পড়ুয়ারা । তাঁদের মতে, এই পরিস্থিতির অন্যভাবেও মোকাবিলা করা যেত ৷
অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসস, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, "প্রায় দু'বছর করোনার অজুহাতে বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । এমনিতেই অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে বাচ্চারা । স্কুল ছুটের সংখ্যাও বেড়েছে । দীর্ঘ সময়ের পর গত ফেব্রুয়ারি থেকেই ছন্দে ফিরছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । আবার ক্লাসরুম মুখরিত হচ্ছিল পড়ুয়ারা । আবার একটা লম্বা ছুটি পড়ে গেল । হ্যাঁ, গরম অসহ্য হয়ে উঠছিল ৷ অসুস্থ হবার ভয় ছিল, কিন্তু তারপরেও অন্য উপায় ভাবা যেতে পারত । এরপর যদি আবার করোনার চতুর্থ ঢেউ আসে তাহলে আবার অনির্দিষ্টকালের জন্য হয়তো বন্ধ করে দিতে হবে স্কুল ।" এই বিষয়ে পাশের রাজ্য ওড়িশার উদাহরণ দেন তিনি ৷ বলেন, "ওড়িশা সরকার পাঁচদিন স্কুল ছুটি দিয়ে অপেক্ষা করছে আবহাওয়া পরিবর্তনের, তারপর আবার সিদ্ধান্ত নেবে ।
এদিকে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, "বিদ্যালয়গুলিতে প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন, একাদশ শ্রেণির প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার মুখে হঠাৎ করে গরমে ছুটি পড়ে গেল ৷ শিক্ষা দফতর থেকে সকাল সকাল স্কুল চালুর পরামর্শ জারি হয়েছিল ৷ তারপরও মুখ্যমন্ত্রীর আচমকা প্রায় দেড় মাসের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির ঘোষণা বিস্ময়কর । প্রাথমিকভাবে কিছুদিন কি মর্নিং স্কুল চালু করা যেত না ? উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে গ্রীষ্মের দাবদাহের কোনও চিহ্ন নেই । সামগ্রিকভাবে আবহাওয়ার অবস্থা কেমন থাকবে তা না জেনেই এত দীর্ঘ দিনের ছুটি ঘোষণা কি বাস্তবসম্মত ?" প্রশ্ন তাঁর ৷