কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর: তাঁর নিয়োগ করা উপাচার্যদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন রাজ্যপাল ৷ ভিডিয়ো বার্তায় তাঁর আরও দাবি ছিল, এই হুমকির কারণেই 5 উপাচার্য পদত্যাগ করছেন। রাজ্যপালের এই অভিযোগ কতটা ঠিক তা খতিয়ে দেখতে ওই 5 জনের বক্তব্য জানতে চায় উচ্চ শিক্ষা দফতর। 11 সেপ্টেম্বরের মধ্যে বক্তব্য জানাতে বলা হলেও কোনও তথ্য শিক্ষা দফতরে জমা পড়েনি। এমতাবস্থায় আবারও চিঠি দিল শিক্ষা দফতর। তাতে বলা হয়েছে, উপাচার্যদের পদত্যাগ নিয়ে রাজ্যপাল যে দাবি করেছেন তা মিথ্যা।
7 সেপ্টেম্বর ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল দাবি করেন, শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে উপাচার্যদের নিজের পদ ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে ৷ এরপরই রাজ্যের শিক্ষা দফতর পদক্ষেপ করে ৷ পদত্যাগী উপাচার্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়, 11 সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজ্যপালের বক্তব্যের সমর্থনে প্রমাণ জমা দিতে হবে ৷ সূত্রের খবর, উচ্চশিক্ষা দফতরের কাছে এখনও এমন কোনও প্রমাণ আসেনি ৷
রাজ্যপাল তথা আচার্যের হুমকি বিষয়ে মন্তব্যকে ঘিরে শিক্ষা দফতর পাঁচ পদত্যাগী উপাচার্যদের চিঠি পাঠায় ৷ এই তালিকায় ছিলেন- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অমিতাভ দত্ত, রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায়, ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই গৌতম মজুমদার, উত্তরবঙ্গের সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায় ও নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চন্দন বসু ৷ সময় পেরিয়ে গেলেও উচ্চশিক্ষা দফতরে কোনও তথ্য এসে পৌঁছয়নি ৷ তাই আবারও চিঠি দিল উচ্চশিক্ষা দফতর ৷
এই প্রসঙ্গে উচ্চশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে ফের পাঁচ পদত্যাগী উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, 11 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ধার্য করা সময়ের মধ্যে কোনও উপযুক্ত তথ্য দফতরে আসেনি ৷ অতএব, এর দ্বারা প্রমাণিত উপাচার্যদের কোনও রকমের হুমকি দেওয়া হয়নি ৷ এরই সঙ্গে বোঝা গেল আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস যে অভিযোগ করেছিলেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যে ৷ পাশাপাশি তিনি রাজ্য সরকার ও পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা দফতরের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ৷
8 সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে 31টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারদের সঙ্গে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ৷ 31টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারদের মধ্যে ওইদিন উপস্থিত ছিলেন মাত্র 12 জন রেজিস্ট্রার ৷ রাজ্য প্রশাসনের দাবি, রেজিস্ট্রারদের যোগ না দিতে কার্যত নির্দেশ জারি হয়েছিল রাজভবনের তরফে ৷ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপালকে এ নিয়ে কটাক্ষও করেন ৷
আরও পড়ুন: আচার্যের মন্তব্যের পর পাঁচ পদত্যাগী উপাচার্যকে চিঠি দিল উচ্চশিক্ষা দফতর
তিনি বলেন,"তাঁর (রাজ্যপালের) নিয়োগ করা উপাচার্যরা বলছেন, রাজভবন থেকে বলা হয়েছে রেজিস্ট্রাররা যাতে এই বৈঠকে যোগ না দেন ৷ আধিকারিক হয়েও সরকারি নির্দেশকে উপেক্ষা করে এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার সাহস পাননি ৷ আমাদের কাছে মেসেজ রয়েছে ৷ হুমকির বাতাবরণ তৈরি করছেন কে ? হাড়হিম করার ঠান্ডা সন্ত্রাস তৈরি করছেন কে ? কে তাহলে ভয় দেখাচ্ছেন রাজার বাড়ি না বিকাশ ভবন ?"