কলকাতা, 15 জানুয়ারি : চারটি পৌরনিগমের নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিল নবান্ন । রাজ্যে পৌর নির্বাচন আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত মেনে নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার (WB Government send no objection letter to SEC over civic polls postponement) ।
গত 28 ডিসেম্বর, 2021-এ রাজ্য নির্বাচন কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, 22 জানুয়ারি বিধাননগর, আসানসোল, শিলিগুড়ি ও চন্দননগরে পৌর নির্বাচন হবে ৷ কিন্তু বড়দিন ও নতুন বছরে উৎসবের মরশুমে দেশ তথা রাজ্যে ফের ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ, দোসর ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ৷ এখনও বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ ৷ করোনা বিধিনিষেধ নিয়ে একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার ৷ এই পরিস্থিতিতে চারটি পৌর নির্বাচন স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়ে এক সমাজকর্মী হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন ।
10 জানুয়ারি মামলার শুনানিতে, নির্বাচন কমিশন আদালতে হলফনামা জমা দেয় ৷ সেখানে বলা হয়, করোনাবিধি মেনেই নির্দিষ্ট সময়ে ভোট হবে । পরের দিন 11 জানুয়ারি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ যে জায়গাগুলিতে নির্বাচন হবে, সেখানে কতজন করোনা আক্রান্ত, কতগুলি কনটেনমেন্ট জোন রয়েছে তা জানানোর নির্দেশ দেয় রাজ্যকে ৷ অন্যদিকে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছেও আদালত জানতে চায় এই করোনা পরিস্থিতিতে ভোট করার মতো পরিকাঠামো কি আদৌও কমিশনের আছে ?
আরও পড়ুন : High Court On Bengal Civic poll 2022 : করোনার বাড়বাড়ন্তে পৌরভোট স্থগিত হবে কি, 48 ঘণ্টার মধ্যে কমিশনকে সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
বৃহস্পতিবার 13 জানুয়ারি ভোট পিছনোর এক্তিয়ার নিয়ে জানতে চায় আদালত ৷ রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন একে অপরের কোর্টে বল ঠেলতে থাকে ৷ নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চকে জানান, কমিশন এককভাবে ভোটের দিনক্ষণ পিছনোর বা ভোট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ৷ তার জন্য রাজ্যের সম্মতি দরকার ৷ রাজ্য সরকার (West Bengal Government) যদি বর্তমান করোনা অবস্থাকে 'বিপর্যয়' ঘোষণা করে, তাহলে নির্বাচনের দিনক্ষণ এমনিতেই পিছিয়ে যাবে ৷
অন্যদিকে, ভোট স্থগিত নিয়ে কমিশনের দিকে বল ঠেলেন রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল ৷ তাঁর দাবি, ভোট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত একমাত্র কমিশনই নিতে পারে ৷ রাজ্যের তরফে সংশ্লিষ্ট পৌরনিগমগুলির টিকা ও সংক্রমণের পরিসংখ্যান জানানো হয় আদালতে ৷ রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission) ও রাজ্য সরকার, দু'পক্ষের বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করেন, "ভোট স্থগিত করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্যের বক্তব্যে সামঞ্জস্য নেই কেন ? আপনারা আগে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুন ৷"
শেষমেশ গতকাল, 14 জানুয়ারি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে 48 ঘণ্টা সময় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট । করোনা পরিস্থিতিতে চারটি পৌর নির্বাচন আপাতত 4-6 সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখা যায় কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকেই ৷
আরও পড়ুন : Bengal Civic Polls 2022 : পৌরভোটে স্থগিতাদেশ জারির এক্তিয়ার কার, প্রশ্ন হাইকোর্টের
জানা গিয়েছে, এই বিস্তর টানাটানি শেষে আদালতের পরামর্শকে মান্যতা দিয়ে গতকালই রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয় ৷ কমিশনের পক্ষ থেকে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবে সায় দেয় নবান্ন । কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের দিন পিছনো নিয়ে নবান্ন থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে । নির্বাচনের পরিবর্তিত তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে আজই ৷