কলকাতা, 18 এপ্রিল : আর মাত্র পাঁচদিন। তারপরই শুরু হয়ে যাবে রমজান মাস । এই সময়টায় ফলের বাজারের পারদ চড়তে শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু কোরোনা ভাইরাস যাবতীয় স্বপ্নে ধাক্কা দিয়েছে। যার জেরে গোটা পৃথিবীর মানুষ এখন প্রাণ বাঁচাতে ঘরবন্দী।
শিয়ালদহ সুরেন্দ্রনাথ কলেজের গলিতে তরমুজের বিরাট দোকান বসে । অন্যান্য বছর ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো যায় না । কিন্তু, এবার চিত্রটা ভিন্ন। খদ্দের নেই। বিক্রিবাটা কার্যত শিকেয় ।
জয়নগর থেকে তরমুজ বিক্রি করতে আসেন ওঁরা । এবারও দোকান দিয়েছেন । ব্যবসায় মন্দা। তাই নিজের খাবার জুটছে না, পরিবারকেও টাকা পাঠানোর উপায় নেই । গ্রামে ফেরাও সম্ভব হচ্ছে না । কারণ, গ্রামের লোক ওঁদের ঢুকতে দিচ্ছেন না । পুলিশ লাঠিপেটা করছে । ফলে উভয় সংকট । এই অবস্থায় সরকারি সাহায্য বাঁচার রসদ হতে পারত । কিন্তু তা সম্ভব নয় । কারণ, ওঁরা মধ্যবিত্ত । সুনসান কলকাতা শহরে ওঁদের কথা যেন সমাজের অব্যক্ত যন্ত্রণা ।
এই বিষয়ে জয়নগর থেকে আসা তরমুজ বিক্রেতা মহম্মদ আলি মণ্ডল বলেন , " কিছুদিন বাদেই শুরু হচ্ছে রমজান । লোকের কাজকর্ম নেই, হাতে টাকাও নেই। ফল কিনে খাবে কী করে ? তাই বিক্রি হচ্ছে না । সকাল থেকে দোকান খুলে বসে আছি বিক্রির আশায় । হাতে টাকা-পয়সা নেই , ভাত খাব সেই উপায়ও নেই । এদিকে পরিবারের মানুষগুলির জন্যও চিন্তা হচ্ছে । বাড়ি ফিরব সেই উপায়ও নেই । পাড়ার লোকে ঢুকতে দিচ্ছেন না । বলছেন, কলকাতা থেকে এসেছ কোরোনা নিয়ে । তাহলে সরকার আমাদের কোরোনা পরীক্ষা করে দেখুক । সবথেকে বেশি অসুবিধা আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের । ধনীদের টাকা আছে। ওরা সেখান থেকে খাচ্ছে, গরিবরা ত্রাণ থেকে দিন কাটাচ্ছে । কিন্তু আমরা মধ্যবিত্তরা কোথাও চাইতে পারব না । "