কলকাতা, 28 অক্টোবর: দেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) অর্থাভাব ক্রমে আরও সংকটজনক হয়ে উঠছে ৷ পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা প্রাক্তনীদের কাছে অর্থসাহায্যের আবেদন করলেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস (Suranjan Das) !
তথ্য বলছে, 2017 সালের পর থেকেই ধীরে ধীরে কমেছে কেন্দ্র এবং রাজ্যের আর্থিক অনুদান ৷ এরপর করোনা সংক্রমণের জেরে সেই অনুদানের পরিমাণ আরও হ্রাস পায় ৷ এর ফলে থমকে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংরক্ষণ এবং সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ ৷ শুধু তাই নয় ৷ করোনাকালে যখন একটানা দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়, তখন আর্থিক অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যার সমুখীন হতে হয়েছে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের ৷ এছাড়াও, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিজ্ঞান বিভাগের গবেষণাগারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক কেনা সম্ভব হচ্ছে না ৷ গ্রন্থাগারে বইয়ের সংখ্যাও বাড়ানো যাচ্ছে না ৷ সবক'টি বিভাগে একাধিক কাজ আটকে রয়েছে ৷ রাজ্য সরকার যে আর্থিক অনুদান দেয়, তার থেকেই চলে 'মেন্টেনেন্স ফান্ড' ৷ কিন্তু, গত দু-তিন বছরে এই খাতে বরাদ্দ কমেছে ৷ অন্যদিকে, কেন্দ্রের অনুদানও প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে ৷ এক কথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাঁড়ার প্রায় শূন্য !
আরও পড়ুন:যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সমাবর্তনে কাঁটা আর্থিক সংকট, চিঠি রাজ্যকে
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বরাদ্দ ধাপে ধাপে কমেছে ৷ ইতিমধ্য়েই প্রাক্তনীদের থেকে আর্থিক সহায়তার আশায় তৈরি করা হয়েছে 'যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালুমনি সেল' ৷ তবে সেখানেও এখনও যথেষ্ট অর্থ জমা হয়নি ৷ তাই সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকে প্রাক্তনীদের পেজে (গ্লোবাল যাদবপুর ইউনিভার্সিটি অ্যালুমনি ফাউন্ডেশন) একটি খোলা চিঠি পোস্ট করে আর্থিক সহায়তার আবেদন করেছেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস ৷ সেই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে ভয়ংকর আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে ৷ এর ফলে একাধিক উন্নয়নমূলক এবং পরিকাঠামোগত কাজ থমকে গিয়েছে ৷ তাই প্রাক্তনীদের কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানানো হচ্ছে ৷
সূত্রের খবর, মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক্তনীদের একটি সংগঠনের কাছেই এই আবেদন জানানো হয়েছে ৷ তবে, একইসঙ্গে অন্যরাও চাইলে আর্থিক সহযোগিতা করতে পারেন ৷ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়ার বাসিন্দা 92 বছরের রমেন চক্রবর্তী সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন ৷ সেই ভিডিয়োয় তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহায্যের জন্য প্রাক্তনীদের এগিয়ে আসার আবেদন করেন ৷ উল্লেখ্য, রমেন 1954 সালে যাদবপুর কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিলেন ৷ তারপর বিদেশে চলে যান চাকরি নিয়ে ৷ এখনও সেখানেই থাকেন তিনি ৷