কলকাতা, 30 নভেম্বর: আরও একবার বিধানসভার অলিন্দে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার অভিযোগ। অভিযোগ বিরোধী দল বিজেপি'র বিরুদ্ধে। তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ করেছে. জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও দ্বিতীয়দিন কাঁসর, ঘণ্টা, থালা বাজিয়ে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করা হয়েছে। এই অভিযোগে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ করেছে শাসক শিবির। একইসঙ্গে হেয়ার স্ট্রিট থানাতেও দ্বিতীয়বার বিজেপির বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার অভিযোগ জমা পড়েছে।
অতীতে বিধানসভা বহু তাপ-উত্তাপ, সংঘাতের ছবি দেখেছে। কিন্তু পরপর দু'দিন বুধ এবং বৃহস্পতিবার যেভাবে শাসক এবং বিরোধীদলকে সম্মুখসমরে দাঁড়িয়ে পরস্পরকে 'চোর' সম্বোধন করতে দেখা গিয়েছে তা অতীতে শেষ কবে দেখা গিয়েছে বলা মুশকিল। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শাসক-বিরোধী পক্ষ পরস্পরকে 'চোর-চোর' স্লোগান দিয়ে বিদ্ধ করেছিল। বৃহস্পতিবার তার সঙ্গে যুক্ত হল থালা, কাঁসর, বাঁশি ৷ স্বাভাবিকভাবে খোলা চোখে এমন ছবি নজিরবিহীন। এদিন শাসক এবং বিরোধী দুই পক্ষকেই অবস্থানে পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছল শেষ পর্যন্ত উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারদের বিধানসভায় ঢুকতে হল। তাঁরা বিধানসভা চত্বরে ঘোরাঘুরি করলেন এমনকী সাদা পোশাকেও পুলিশ বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীদের হাজির করাতে হল যাতে পরিস্থিতি হাতের বাইরে না চলে যায়।
আর এসবের মাঝেই দ্বিতীয়বার জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ উঠল বিধানসভায়। শাসক দলের তরফ থেকে বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় দ্বিতীয়বারের জন্য অভিযোগ জানানো হল জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা নিয়ে। বুধবার অভিযোগ ছিল জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন 'চোর চোর' স্লোগান দেওয়ার। আর সে কারণে 12 জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এদিন ঠিক কতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে জানা যায়নি, তবে দ্বিতীয়বারের জন্য একই অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। তবে এদিন চোর নয়, থালা-কাঁসর, ঘণ্টা বাজিয়ে বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার অভিযোগ তুলল তৃণমূল। সবমিলিয়ে আরও একবার বিধানসভার চত্বরে গোটা বাংলার মানুষ তাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের "কুনাট্যরঙ্গ" দেখল।
প্রসঙ্গত এদিনের এই ঘটনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, "শাসক দলের তরফ থেকে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আমার কাছে আজকের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটা অভিযোগ জমা দিয়েছেন। গতকালের মতোই আজও কর্মসূচি চলাকালীন উলটোদিকে কাঁসর-ঘণ্টা বাজিয়ে স্লোগান দিয়ে কর্মসূচিতে ব্যাঘাতের অভিযোগ করেছেন তিনি ৷ একইসঙ্গে জাতীয় সংগীতের অবমাননার কথা বলেছেন। আমি এই অভিযোগ পত্র সরাসরি পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি বিষয়টিকে বলেছি তদন্ত করার জন্য।" আজকে জাতীয় সংগীত অবমাননার অভিযোগে কারও নাম রয়েছে কি না, জানতে চাওয়া হলে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি স্পিকার। তিনি বলেন, "বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, এখনই আমি মুখ খুলব না। এই নিয়ে যা বলার শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলবেন।"