কলকাতা, 7 ডিসেম্বর: দীর্ঘ সময় 100 দিনের কাজের টাকা বন্ধ রাখার পর অবশেষে তা দেওয়ার বিষয়ে সবুজ সংকেত দিল কেন্দ্র (Union Minister Discuss with State Panchayat Minister About 100 Days Work Money)। এই বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বুধবার রাজ্যের পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারকে ফোন করেন ৷ জানা গিয়েছে, সেখানেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রীকে টাকা দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন । একইসঙ্গে আশা প্রকাশ করেছেন যে রাজ্য অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে ভালো কাজ করবে ।
এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর 100 দিনের কাজ নিয়ে অভিযোগের কথাও রাজ্যের মন্ত্রীর কাছে তোলেন গিরিরাজ । সূত্রের খবর মন্ত্রী বলেছেন, কোনও অভিযোগ থাকলে সরাসরি তা আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিন । আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং তার গ্রাউন্ড রিপোর্ট কেন্দ্রকে পাঠাব ।
রাজ্যের মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে খুশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী । প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন, রাজ্যের ক্ষেত্রে যে সমস্ত অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল তা অতি নগণ্য পার্সেন্টেজের হিসাবে দেখলেও তা এক শতাংশেরও বেশি নয় । রাজ্যের দেওয়া এই তথ্য আগেই মেনে নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার । নতুন করে তারা রাজ্যের কাছ থেকে কোনও কাগজ বা তথ্য জানতেও চায়নি । কাজেই এই ধরনের একটা সুখবর যে আসার ছিল তাতে কোনও সন্দেহ নেই ।
আরও পড়ুন :মালদায় 100 দিনের কাজে এক ব্লকে 302 ভুয়ো প্রকল্প ! 2 বছরে 1500 কোটির দুর্নীতি ?
গত শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন প্রদীপবাবু স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, 100 দিনের কাজে কোনও অনিয়ম হচ্ছে না । নির্দিষ্ট সরকারি আইন মেনে মহাত্মা গান্ধি জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে কাজ করানো হচ্ছে । এই প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও অনুশাসন রক্ষা করতে একাধিক বিষয় সকল গ্রাম পঞ্চায়েতে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে । এই প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে কোনও রূপ অভিযোগ রাজ্যের কাছে এলে বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসককে জানানো হয় এবং তদন্তের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় ।
তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী সমস্ত কাজের জিও ট্যাগিং বাধ্যতামূলকভাবে করা হয়েছে । কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল মোবাইল মনিটরিং অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে সব শ্রমিকের প্রত্যেকদিন দু'বার হাজিরা গ্রহণ সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে । কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনামা নম্বর জিএসআর.495(ই) গত 30 জুন 2011 অনুযায়ী প্রতি আর্থিক বছরে দু'বার সামাজিক নিরীক্ষণ বাধ্যতামূলকভাবে সকল গ্রাম পঞ্চায়েতে করা হয়েছে । এরপরেও টাকা আটকে রাখা অর্থহীন ।
যদিও এখনও টাকা আসেনি । তবে মিলেছে টাকা দেওয়ার আশ্বাস । তবে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে ভালোভাবে দেখছেন না রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান । ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, তিনি মনে করছেন শেষ মুহূর্তে টাকা দিয়ে রাজ্যের ব্যর্থতা প্রকাশ্যে আনতে চাইছে কেন্দ্র । এই মুহূর্তে টেন্ডার ডেকে ডিপিআর তৈরি করে সম্পূর্ণ টাকার কাজ করতে পারবে না রাজ্য । সেক্ষেত্রে রাজ্যকে দোষারোপ করে বলা হবে যে টাকা দেওয়ার পরেও কাজ করতে পারেনি ।
আরও পড়ুন :খাতায় কলমে পুকুর খনন দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে