কলকাতা, 11 এপ্রিল: অচৈতন্য অবস্থায় বেহালার গীতাঞ্জলি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে দুই ভাইকে উদ্ধার করল পুলিশ। রবিবার সকালে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বেহালা থানার পুলিশ পৌঁছায় ঘটনাস্থলে ৷ সন্দীপ ও সুদীপ মিত্র নামের বেহালার চণ্ডীতলার বাসিন্দা দু'জনকে সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে সন্দীপ মিত্রকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক । তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । আর সুদীপ আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই হাসপাতালে। তাঁদের আত্মীয়ের খোঁজ করছে পুলিশ। জানা গিয়েছে দু'জনেই পঞ্চাশোর্ধ্ব ।
পুলিশ ও প্রতিবেশী সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপ মিত্র, সুদীপ মিত্র বছরখানেক আগে বেহালা থানা এলাকার রায়বাহাদুর রোডের চণ্ডীতলায় গীতাঞ্জলি অ্যাপার্টমেন্ট নামের বহুতল আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। তবে আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গে খুব একটা মিশতেন না তাঁরা । তাঁরা কী কাজ করতেন সেই বিষয়ে কিছুই জানেন না ওই আবাসনের সদস্যেরা ।
আরও পড়ুন: রাস্তার অবস্থা বেহাল, নো রোড নো ভোট পোস্টার রায়গঞ্জে
রবিবার সকালে তাঁদের ফ্ল্যাটের পরিচারিকা এসে বারবার ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়াশব্দ মেলেনি ভিতর থেকে। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করা ছিল বলে জানা গিয়েছে। তখন জানলা দিয়ে উঁকি মেরে তিনি দেখেন যে ফ্ল্যাটের মেঝেয় জ্ঞানহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন দু'জনেই। আতঙ্কিত পরিচারিকা ডেকে আনেন আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দাদের। তাঁরাই খবর দেন বেহালা থানায় ৷ তাঁদের ফ্ল্যাটের একটি অতিরিক্ত চাবি গাড়িরচালকের কাছেই থাকত, তাই ডেকে পাঠানো হয় ওই গাড়িচালককে। চাবি দিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা খুলে তাঁদের উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বেহালার এই বহুতল আবাসনে থাকতেন সন্দীপ আর সুদীপ মিত্র প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে দু'জনেই বিষ বা কীটনাশক জাতীয় কিছু খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তাঁদের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। এই নোট থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, তাঁরা আর্থিক সঙ্কটে ছিলেন আর তাঁদের প্রচুর আর্থিক দেনাও রয়েছে । এ ছাড়া তাঁরা বেশ কিছু টাকা বিভিন্ন মানুষকে ধার দিয়ে তা সময়মতো ফেরত না পাওয়াতেই তাদের পরিস্থিতির অবনতি হয় ৷ ঘরের মধ্যে থেকে পাওয়া গেছে মদের বোতল। অনুমান, মদের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খেয়েছিলেন তাঁরা।
সুদীপের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তাঁর সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানিয়েছেন বেহালা থানার তদন্তকারী অফিসার । এই ঘটনায় আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ।