কলকাতা, 1 ডিসেম্বর: সাম্প্রতিক সময়ে দিল্লির বিজেপি (BJP) নেতারা বাংলায় এসে রাজ্যের শাসক দলকে পরিবারতন্ত্র নিয়ে বারবার খোঁচা দিয়েছেন । যদিও তার জবাব দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) । তবে এরপরও পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ থেকে বের হতে পারছে না তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) ।
অবশ্য ব্যতিক্রম একটা আছে ৷ যেখানে দেখা গিয়েছে রাজনীতির সঙ্গে অতীতে কোনও যোগাযোগ না থাকলেও সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির ছেলে সপ্তর্ষি বক্সিকে দলের যুব সংগঠনের অন্যতম সম্পাদক পদে রাখা হলেও মাত্র 24 ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল । যদিও এক্ষেত্রে তিনি নিজে থেকে সরে গেলেন নাকি তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল, তা নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট নয় ।
বুধবার শাসক দলের তরফ থেকে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের (TMYC) রাজ্য কমিটির যে তালিকা প্রকাশ করা হয় এদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তাতে কিছু সংযোজন এবং বিয়োজন করা হয় । তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রতর পুত্র সপ্তর্ষি বক্সীকে প্রথমে সম্পাদক পদ দেওয়া হলেও এদিন অবশ্য তাৎপর্যপূর্ণভাবে তাঁর নাম বাদ গিয়েছে । হঠাৎ কেনইবা তাঁকে রাখা হল ! আর কেন তাঁর নাম বাদ গেল, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয় ।
প্রসঙ্গত, বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে শাসক রাজনীতিকদের পরবর্তী প্রজন্মের নেতাদের নাম রয়েছে । রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন একাধিক নেতা-নেত্রীর ছেলে অথবা মেয়ে । এর মধ্যে নাম রয়েছে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের পুত্র সৌরভ বসু, বাম নেতা ক্ষিতি গোস্বামীর কন্যা কলকাতা পৌরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর বসুন্ধরা গোস্বামী, সঞ্জয় বক্সীর পুত্র সৌম্য বক্সী এবং শোভনদের চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে সায়নদেব চট্টোপাধ্যায়, শশী পাঁজার মেয়ে পূজা পাঁজা প্রমূখ ।
এখানেই শেষ নয়, সম্পাদক হিসেবে এই তালিকায় রয়েছেন কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের মেয়ে প্রিয়দর্শিনী ঘোষ এবং প্রাক্তন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডে । অন্যদিকে, স্বর্ণকমল সাহার ছেলে অর্পণ সাহা এবং শংকর সিংহের ছেলে শুভঙ্কর সিংহ পেয়েছেন সহ-সভাপতি পদ । 52 জনের এই কমিটিতে একইভাবে জায়গা পেয়েছেন চণ্ডীপুরের বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী এবং বাঘমুণ্ডীর বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো । এই দুজনেই শুভঙ্কর এবং অর্পণের সঙ্গে যৌথভাবে সহ-সভাপতির দায়িত্ব সামলাবেন ।
শাসক দলের যুব সংগঠনের এই তালিকা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীপক্ষ । রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির তরফ থেকে বলা হয়েছিল, দলের যুব সংগঠন মূলত বড় নেতাদের ছেলেমেয়েদের জায়গা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে । আর সেই কারণেই কি দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর ছেলের ঘোষণার পরও 24 ঘণ্টার কম সময়ের ব্যবধানে তার নাম সরিয়ে নেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে ।
আরও পড়ুন:যুব তৃণমূলের রাজ্য কমিটি থেকে বাদ দেবাংশু, তালিকায় একাধিক মন্ত্রীর পুত্র-কন্যার নাম