পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

150 Years of Kolkata Tram: সার্ধশতবর্ষ পূর্তির দোরগোড়ায় কলকাতার ট্রাম, লক্ষ্মণরেখায় বন্দি পথেই শহরে চলমান ইতিহাস

1873 সালের 24 ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ আমলে কলকাতায় শুরু হয়েছিল ট্রাম পরিষেবা ৷ ঘোড়ায় টানা কাঠের ট্রাম বিবর্তনের পথ পেরিয়ে বৈদ্যুতিক ট্রামে পরিণত হয়েছে ৷ আর কয়েকদিন পরেই 150 বছর পূর্ণ হবে কলকাতায় ট্রাম যাত্রার (150 Years Kolkata tram service) ৷

ETV Bharat
কলকাতার ট্রাম

By

Published : Feb 21, 2023, 6:27 PM IST

কলকাতা, 21 ফেব্রুয়ারি:সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলেছে সবকিছু । হয়েছে বিবর্তন । পুরনোকে বিদায় জানিয়ে নুতনকে স্বাগত জানিয়েছে মানুষ । পুরনো যা কিছু এখন দেখা যায় জাদুঘরে । কিংবা কারও ব্যক্তিগত সংগ্রহে । একইভাবে সময়ের সঙ্গে তাল রেখে বদলেছে কলকাতা । অন্য আর পাঁচটা শহরের মত গতি পেয়েছে কল্লোলিনী কলকাতা ।

তবে 150 বছর আগের কলকাতার একটা খন্ডচিত্রের অংশ ট্রাম এখনও দিব্যি চলছে কলকাতার বুকে । 24 ফেব্রুয়ারি কলকাতার ট্রামের জন্মদিন । 1873 সালের 24 ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ আমলে প্রথমবার শুরু রাস্তা দিয়ে চলে ঘোড়ায় টানা কাঠের ট্রাম। শিয়ালদা থেকে আর্মেনিয়ান ঘাট পর্যন্ত প্রথমবার ছুটেছিল সেই ট্রাম। এই বছর কলকাতার সেই ট্রাম যাত্রা পা রাখতে চলেছে দেড়শো বছরে (Tram service in Kolkata)৷

তবে প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ট্রামেরও বিবর্তন হয়েছে। 1902 সালের 27 মার্চ ধর্মতলা খিদিরপুর-রুটে প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রাম চলেছিল। অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ভারতে কলকাতা ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি শহরে একসময় চলত ট্রাম ৷ কলকাতার পর তৎকালীন মাদ্রাজ, দিল্লি, বোম্বে, কানপুর, ভাভনগর, নাসিক এবং পাটনাতেও শুরু হয়েছিল ট্রাম পরিষেবা। এমনকী ব্রিটিশ ইন্ডিয়ায় করাচি এবং কলম্বোতেও ছিল ট্রাম পরিষেবা। তবে সেগুলি সবই পরে বন্ধ হয়ে যায়। কল্লোলিনী কলকাতার জীর্ণকায়ে ট্রাম কোনওমতে বাঁচিয়ে রেখেছে নিজের অস্তিত্ব (history of Kolkata tram service)।

একসময় রমরম করে স্বমহিমায় শহরের বুক চিঁড়ে ঘণ্টির শব্দ করে দৌঁড়ে যেত ট্রাম ৷ সেই দৃশ্য এখন বড়ই বিরল । ঠাণ্ডা ঘরে ঢুকেছে ট্রামের ভবিষৎ । তাই বোধহয় ট্রামের 150 বছর নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসাহ একেবারেই নেই । তবে শহরের ট্রামপ্রেমী সংগঠন ক্যালকাটা ট্রাম ইউজারস অ্যাসোসিয়েশন, ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন ও ট্রাম যাত্রা বলে একটি সংগঠনের উদ্যোগে এই উপলক্ষ্যে এক বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ৷

যদিও এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয়েছে কয়েকদিন আগেই তবে মূল অনুষ্ঠানের সূচনা হবে আগামী 24 ফেব্রুয়ারি ৷ আগামী 2 মার্চ শেষ হচ্ছে এই ট্রাম যাত্রা উৎসব । রবার্তো ডি আন্দ্রেয়া, যিনি মেলবোর্ন শহরের প্রাক্তন ট্রাম চালক এবং কন্ডাক্টর । কলকাতার ট্রামের টানে তিনি গত কয়েক বছরে সাতবার ঘুরে গিয়েছেন এই শহরে। তিনি থাকবেন সেই অনুষ্ঠানে এবং অস্ট্রেলিয়া ও জার্মান কনস্যুলেট জেনারেলদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন:আয় বাড়াতে ট্রাম মিউজিয়ামের সঙ্গে যুক্ত হল 'ট্রাম ওয়ার্ল্ড ক্যাফে'

এই প্রসঙ্গে, ক্যালকাটা ট্রাম ইউজারস-এর অন্যতম সদস্য এবং ট্রাম যাত্রার আয়োজক রুদ্রনীল রায় চৌধুরী বলেন, "বসে আঁকো প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে ট্রাম প্যারেড, প্যানেল ডিসকাশন, ট্রামের মধ্যে প্রদর্শনী এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ট্রামের প্রাসঙ্গিকতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে শহরবাসীর মধ্যে ।" ট্রামের প্রতি প্রেম, বিশেষ করে কলকাতার ট্রামের প্রতি আকর্ষণ সুদূর জার্মানি থেকে টেনে এনেছে লার্স রিকটারকে । শুধু তিনিই নন তাঁর মতো আরও অনেকেই কলকাতার ট্রামের 150 বছরের উদযাপনে সামিল হতে এসেছেন জার্মানি থেকে ।

লার্স রিকটার বলেন, "2011 সালে আমি যখন কলকাতায় এসেছিলাম তখনও 30টি রুটে ট্রাম চলাচল করত । আর এবার এসে দেখছি মাত্র দুটি রুটে ট্রাম চলছে । এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কলকাতায় ট্রাম পরিবহণ ব্যবস্থা অন্যান্য দেশের ট্রাম নেটওয়ার্ক তুলনায় অনেকটাই অন্যরকম। শতাব্দী প্রাচীন এই ট্রামগুলি এখনও পরিষেবা দিয়ে চলেছে । খুবই খারাপ লাগে দেখলে যে এই ট্রাম ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার কথা না ভেবে সরকার এটাকে ধীরে ধীরে সংকুচিত করে একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে ।" তাঁর মতে, শুধুমাত্র ট্রামকে উন্নত করলেই চলবে না ট্রাম এবং অন্যান্য পরিবহণ ব্যবস্থা যাতে একে অপরের সমস্যা সৃষ্টি না-করে পরিষেবা দিতে পারে সেইভাবে পরিকল্পনা করতে হবে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details