শিলিগুড়ি ও কলকাতা, 19 অক্টোবর : শিলিগুড়িতে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করলেন ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডা ৷ যদিও তাঁর আক্রমণের প্রতিক্রিয়া দিতে দেরি করেননি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন৷
শিলিগুড়িতে দলীয় সভায় এদিন নাড্ডা বলেন, "মোদিজির নীতি হল সকলকে নিয়ে সকলের বিকাশ ৷ অন্যদিকে মমতাদির সরকার বিভাজনের নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে শাসন চালাচ্ছে ৷ তৃণমূল পরিচালিত সরকার যেখানে বিভাজনের নীতিতে ভর করে চলছে সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতা রয়েছে সকলকে একসূত্রে বেঁধে সকলের বিকাশের কাজ করার ৷"
কৃষি আইন নিয়ে অস্বস্তিতে পড়া BJP এরাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে কৃষকদের ভোট ঘরে তুলতে কতটা মরিয়া তা-ও এদিন বোঝা গিয়েছে নাড্ডার ভাষণে৷ তিনি বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী-কিষান সম্মান নিধি যোজনা চালু করেছে 10 কোটি কৃষকের জন্য। ইতিমধ্যেই 8.60 কোটি কৃষক এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন৷ যদিও দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই প্রকল্প বাংলায় চালুর জন্য আগ্রহই দেখায়নি মমতা সরকার৷ আমি তাই কৃষকদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই, বাংলায় BJP ক্ষমতায় এলে সমস্ত কৃষক সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা পাবেন৷" BJP-র সর্বভারতীয় সভাপতিকে স্বাগত জানাতে এদিন বাগডোগরা বিমানবন্দরে হাজির হন অসংখ্য দলীয় কর্মী৷ শিলিগুড়ির কাছে নৌকাঘাট মোড়ে পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মাল্যদান করে দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে যান নাড্ডা৷
কৃষকদের মন জয়ের চেষ্টায় নাড্ডা, বিজেপি সভাপতির দাবি ওড়াল তৃণমূল রাজ্য সরকারকে নাড্ডার আক্রমণের পালটা জবাব দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন বিবৃতি প্রকাশ করে জানান, JP নাড্ডাজি ও তাঁর পরিবারকে পুজোর শুভেচ্ছা জানাই ৷ এই সময়টা আমাদের বাংলায় রাজনীতি বা ঝগড়া করার সময় নয় ৷ পরস্পরের মধ্যে আনন্দ, ভালোবাসা ভাগ করে নেওয়ার সময় ৷ এই সংস্কৃতি, এই শালীনতা বাংলার প্রত্যেকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে গেঁথে রয়েছে ৷ তবে মজার কথা হল, ঔপনিবেশিক অতীতে শেখা যে 'Divide and rule' শব্দটির কথা বলছেন BJP-র সর্বভারতীয় সভাপতি, যেটা তাঁদের দল প্রতিদিন চালিয়ে যাচ্ছে৷ ফলে তাঁর নিজের বক্তব্যেই বিড়ম্বনা অগ্রাহ্য করার উপায় নেই ৷ কেন না, বিগত 6 বছরের বেশি সময় ধরে ভারতীয় জনতা পার্টি দেশবাসীর মধ্যে বিভাজন ঘটাতে কোনও কিছুই বাকি রাখছে না ৷ ডেরেক আরও লিখেছেন, নাড্ডার ভাষণে যে তথ্য তিনি দিয়েছেন তা তাঁর দুই সিনিয়র নেতা-র বক্তব্যের মতোই অন্তঃসারশূন্য৷ কিন্তু না, সে সব বলে উৎসবের আবহকে কলুষিত করতে চাই না ৷ বাংলার কাছে এই সময়টা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, তাই সেই উৎসবের আমেজ অক্ষুণ্ণ থাক ৷