কলকাতা, 6 জুলাই:সালটা 2006 । সিঙ্গুরে শুরু হয়েছিল জমি আন্দোলন । সিঙ্গুরের জমি রক্ষায় ধর্না, আন্দোলন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই আন্দোলনে রাজ্য থেকে পাততাড়ি গুঁটিয়েছিল টাটা, বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ন্যানো তৈরির কারখানা । একইসঙ্গে রাজ্যে তড়িৎগতিতে উত্থান হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । ঠিক পাঁচ বছর পর রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল, যার ভিত্তি ওই 2006 সালের সিঙ্গুর আন্দোলনই (TMC once known for Singur Movement)।
কাট টু 2022 । প্রায় 16 বছর পর সেই মমতার সরকারের বিরুদ্ধেই ভাঙড়, দেউচা-পাচামির পর এবার মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় পুঁজিপতিদের স্বার্থে কৃষিজমি দখলের অভিযোগ উঠেছে । বামফ্রন্টের অভিযোগ, জোর করে জমি দখল করে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড হয়েছে । এবার ফরাক্কা ব্লকের ইমামনগর, নয়নসুখ, বেনিয়া গ্রাম অঞ্চলে কৃষিজমি দখল করে পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে তৃণমূল সরকার । সেখানে কৃষক আন্দোলনে পুলিশ লাঠিচার্জও করেছে ।
বামেদের করা ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কা ব্লকের ইমামনগর, নয়নসুখ, বেনিয়া গ্রাম অঞ্চলের কৃষিজমির ওপর দিয়ে আদানি গোষ্ঠীর বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য হাইটেনশন লাইন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । জমি অধিগ্রহণের কোনও নিয়ম না মেনে, কোনও নোটিশ না পাঠিয়ে, গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এই কাজ করা হয়েছে । পুলিশ-প্রশাসন, তৃণমূলের নেতারা চাপ সৃষ্টি করে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জমি নিয়ে পুঁজিপতি গোষ্ঠীকে দিচ্ছে ।
আরও পড়ুন: শিল্প হয়নি, সিঙ্গুরের সেই জমিতে এবার মাছ চাষের প্রকল্প সরকারের
শুধু তাই নয়, ব্যাপক সংখ্যায় গাছও কেটে দেওয়া হচ্ছে । অনিচ্ছুক কৃষকদের একাংশ হাইকোর্টে মামলা করার পরেও তাঁদের ওপরে চাপ তৈরি করা হচ্ছে । প্রতিবাদ করায় পুলিশের নির্যাতনের মুখেও পড়তে হয়েছে অনেককে । যদিও বিরোধীরা বলছেন, সিঙ্গুর আন্দোলনের পর থেকেই আর কৃযকদের কোনও খোঁজ নেয়না মমতার সরকার । সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী সিঙ্গুরে গিয়ে সর্ষে বীজ ছড়িয়ে এলেও কৃযকদের ভবিষ্যৎ সেই বিশ বাঁও জলেই । ফলে সবমিলিয়ে ফের উত্তপ্ত হচ্ছে রাজ্য-রাজনীতি ।