কলকাতা, 31 জুলাই: এই মুহূর্তে রাজ্য তথা দেশে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ দুর্নীতি মামলা । এই ঘটনায় 23 জুলাই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু'টি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় 50 কোটি টাকা উদ্ধার করেছে । নজরে রয়েছে তাঁদের নামে থাকা একাধিক সম্পত্তি, যা সারা রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ।
এই বিতর্কে স্বভাবতই রাজ্যপ্রশাসনকে তুলোধনা করেছে বিরোধী দলগুলি ৷ কোটি কোটি টাকার বান্ডিল নিয়ে জনমানসেও প্রশ্ন জেগেছে ৷ অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তৃণমূল দলের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে ৷ মন্ত্রিত্ব থেকেও অপসারিত হয়েছেন ৷ এই সময় শাসক দলের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Leader Abhishek Banerjee role over SSC Recruitment Scam solution, risk or gain?) ৷
28 জুলাই, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন ৷ সেই অনুযায়ী পরের দিন 29 জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক হয় অভিষেক এবং চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ৷ প্রসঙ্গত, এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে নিজে থেকেই আন্দোলনকারীদের ফোন করেছিলেন অভিষেক ৷ এই বৈঠক সফল হয়েছে বলে দাবি করেন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের নেতা শহিদুল্লা ৷ ছিলেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও (Bratya Basu) ৷
এখানে প্রশ্ন, অভিষেক এই সমস্যার সমাধান করতে সফল হন, তাহলে রাজ্য তথা তৃণমূল কংগ্রেসের গা থেকে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির দাগ ঘুচলেও ঘুচতে পারে ৷ কিন্তু যদি তিনি ব্যর্থ হন ? তাহলে সেই দায় তাঁর কাঁধে চেপে বসবে না তো ? বাস্তবিক এটা যে, তিনি কিন্তু রাজ্য সরকারের কোনও পদে নেই । আগ বাড়িয়ে তাঁর এই পদক্ষেপ উল্টে তাঁকে কোনও বড় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেবে না তো !
আরও পড়ুন: অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক সফল, দাবি আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের
ইতিমধ্যে শুক্রবার এসএসসির আন্দোলনকারী চাকিরপ্রার্থীদের বৈঠকের পর তাঁর ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসের সামনে বিক্ষোভে বসেছিলেন 2014 সালে প্রাথমিক টেট পরীক্ষা উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা ৷ তাঁদের অভিযোগ, 2020-র নভেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ৷ সময় পেরিয়ে গেলেও কাজের কাজ হয়নি ৷ সেই চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কিন্তু 'বৈষম্যমূলক আচরণের' অভিযোগ উঠেছে অভিষেকের বিরুদ্ধে ৷ শান্তিপূর্ণ ধরনায় বসলেও জায়গাটি সরকারের নয়, তাই সেখানে বসা যাবে না, জানানো হয় বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীদের ৷ শুক্রবার দুপুর থেকে সারারাত কাটিয়ে শনিবার সকালে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ সেই অবস্থাতে প্রায় 60 জনকে সেখান থেকে টেনেহিঁচড়ে 7-8টি প্রিজন ভ্য়ানে তুলে লালবাজারে নিয়ে যায় পুলিশ ৷ তাঁদের সঙ্গে দেখা তো করেনইনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁদের উদ্দেশ্যে নিজে কোনও বার্তাও দেননি, জানান চাকরিপ্রার্থীরা ৷ যদিও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের প্রতিনিধি তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন ৷ তাতে রাজি হননি টেট প্রার্থীরা ৷ আর তার পরিণতি, পুলিশের গাড়িতে ঠাঁই পাওয়া ৷