কলকাতা, 21 মার্চ: ভোটে জিতে একঝাঁক নতুন মুখ কাউন্সিলর হয়ে কলকাতা পৌরনিগমে গিয়েছেন ৷ তাঁদের নিয়ে নতুন উদ্যোমে চলার আত্মবিশ্বাস ছিল মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ৷ কিন্তু, মাসিক অধিবেশনে অধিকাংশের দেখা মেলে না ঠিক সময়ে ৷ সেই একই ছবি এবার কলকাতা পৌরনিগমের বাজেট অধিবেশনেও ৷ বাজেট আলোচনার শেষদিনে এক দিকে বিরোধীদের হট্টগোল সামাল দেওয়া ৷ অন্যদিকে, মেয়র ফিরহাদ হাকিমের জবাবি ভাষণ ৷ তাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাতে দলের প্রতিটি কাউন্সিলর উপস্থিত থাকেন অধিবেশন কক্ষে ৷ তা নিশ্চিত করতে এবার হুইপ জারি করলেন তৃণমূলের মুখ্য সচেতক বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত (TMC Issues Whip on Councilors Due to High Absence Rate) ৷
নতুন কাউন্সিলরদের পৌর আইন, অধিবেশনের নানান নিয়ম-সহ সব ধরনের আদব কায়দা শিখিয়েছেন একাধিক সিনিয়র কাউন্সিলর ৷ রীতিমত ক্লাস নিয়েছেন তাঁরা ৷ সেই তালিকায় চেয়ারপার্সন মালা রায়, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার এমনকি ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ৷ তবে, এসব করেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি ৷ ফেব্রুয়ারির মাসিক অধিবেশনের মাঝেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম তৃণমূল কাউন্সিলরদের অনুরোধ করেছিলেন অধিবেশন শুরুর আগে হাজির হতে ৷ তা না হলে কোরাম হচ্ছে না ৷ চেয়ারপার্সন অধিবেশনে আসতে পারছেন না ৷ অধিবেশন বাতিল হয়ে যাবে ৷
মেয়রের সেই কথা একাংশ তৃণমূল কাউন্সিলরদের কানে যায়নি, তা স্পষ্ট ৷ তার উদাহরণ বাজেট পেশের দিন ও আলোচনা প্রথম দিনের শুরুর ছবি ৷ শাসকদলের কাউন্সিলরদের আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে ৷ যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরাও নিজেদের ইচ্ছে মতো এসেছেন ৷ নজিরবিহীন ঘটনা হল, একাধিক কাউন্সিলর বাজেট পেশের দিন বাজেট বই টেবিলে রেখেই বাড়ি চলে গেছেন ৷ হাজিরার খাতায় সই পর্যন্ত করেননি ৷ এ নিয়ে খোদ চেয়ারপার্সন মালা রায় কাউন্সিলরদের সতর্ক করেছিলেন ৷ তবুও ছবিটা বদলায়নি ৷
আরও পড়ুন:কলকাতা কর্পোরেশনের বাজেট অধিবেশনে অসুস্থ মীনাদেবীর পাশে ফিরহাদ
বাজেট আলোচনার প্রথম দিনে সেই একই ছবি দেখা গিয়েছে ৷ তাই দ্বিতীয় দিন যাতে এমন কোনও ঘটনা না হয় ৷ সেই দিকে নজর দিয়ে কলকাতা পৌরনিগমের তৃণমূলের মুখ্য সচেতক বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত হুইপ জারি করতে বাধ্য হন ৷ কেএমসি সূত্রে খবর, বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে বিরোধী বিজেপি, বাম, কংগ্রেস এবং নির্দল কাউন্সিলাররা সকলেই উপস্থিত ছিলেন ৷ কিন্তু, প্রায় 15 শতাংশ তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপস্থিত ছিলেন ৷ যার প্রেক্ষিতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম খানিকটা রসিকতার সুরে বলেছেন, ‘‘শেষ দিন আমার বক্তব্য রয়েছে ৷ সবাই আমাকে ছেড়ে চলে গেলে একা পড়ে যাব ৷ তাই অনুরোধ করেছি সবাই যেন থাকে ৷’’ আর দলের কাউন্সিলরদের আচরণ নিয়ে খানিকটা অসন্তুষ্ট চেয়ারপার্সন মালা রায় নিজেও ৷