কলকাতা, 31 মে: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়াদ শেষ। আর মেয়াদ শেষ হতেই শহরের এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়ে সুরঞ্জন দাস জানিয়ে দিলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ করার সুবিধা অনেক ৷ যার প্রথম কারণ হিসাবে তাঁর ব্যাখ্য়া, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় ৷ সেই সঙ্গে, দায়িত্ব নেওয়ার আগে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালকে তিনি আগাম জানিয়েছেন বলেও এদিন সাফ জানান সুরঞ্জন দাস ৷
উল্লেখ্য, বুধবারই শেষ হয়েছে সুরঞ্জন দাসের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের মেয়াদ। এবার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বড় দায়িত্বে আসলেন তিনি। এবার থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। আগামিকাল অর্থাৎ 1 জুন থেকেই নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ৷ প্রায় 15 বছর একের পর এক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেছেন সুরঞ্জন দাস। 1995 সাল থেকে 2008 সাল পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা দিয়ে শুরু। তারপর ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন 2008 সালে। সেখানে প্রায় সাতবছর উপাচার্য ছিলেন ৷ এরপর যোগ দেন যাদবপুরে। 2015 সাল থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদে ছিলেন অধ্যাপক সুরঞ্জন দাস। সেখানেও টানা আট বছর ছিলেন তিনি। 2021 সালে দায়িত্ব শেষ হলেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসাবে আরও দুই বছর তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। সেই হিসাব অনুযায়ী 2023 সালের 31 মে তাঁর মেয়াদ শেষ হয়েছে। আর মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দিলেন সুরঞ্জন দাস।
দীর্ঘ 28 বছর সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে থেকে এবার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। এরফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অনেক কিছু করা সম্ভব।" রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারকে ইতিমধ্যে তিনি তাঁর মেয়াদ শেষের কথা জানিয়ে দিয়েছেন বলেও স্পষ্ট করেছেন সুরঞ্জন দাস ৷ পড়াশোনার নিরিখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মধ্যে অনন্য, তেমনি রাজনৈতিকভাবেও বেশ নাম-ডাক আছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগও শোনা গিয়েছিল পড়ুয়াদের মুখে। উপাচার্য নিখোঁজের পোস্টারও পড়েছিল ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য থাকাকালীন একাধিকবার ঘেরাও থাকতে হয়েছে অধ্যাপক সুরঞ্জন দাসকে। সেই অতীতকে মনে করে সুরঞ্জন দাস বলেন, "অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন আমি নিজে ছাত্র সংগঠনের চেয়ারম্যান পদে ছিলাম। আমি রাজনীতির বিরুদ্ধে নই। কিন্তু আমি কখনও মনে করি না রাজনীতিতে নিজের অধিকারের কথা তুলে ধরতে গিয়ে অন্যের অধিকার নষ্ট করা উচিৎ।"
আরও পড়ুন:সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে পদোন্নতি-সহ একগুচ্ছ ঘোষণা রাজ্যের
বর্তমানে রাজ্যপাল বনাম রাজ্য সরকার প্রসঙ্গ উল্লেখযোগ্য। সুরঞ্জন দাস চলে যাওয়ার ফলে বর্তমানে উপাচার্য শূন্য হয়ে গেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যদিকে রাজ্যপাল শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও রকম সংযোগ না করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্ধারণ করে চলেছেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রাজ্য বনাম রাজ্যপালের এই তরজা নিয়ে সুরঞ্জন দাসকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "রাজ্য সরকার, আচার্য এবং উপাচার্যদের মধ্যে একটা সমঝোতার মাধ্যমে উচ্চশিক্ষায় অগ্রগতি সম্ভব ৷ আমি আশাবাদী সেটা পশ্চিমবঙ্গে হবে।"