পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

শেষ হল আপার প্রাইমারি মামলার শুনানি, খুব শীঘ্রই হতে পারে রায়দান

By

Published : Nov 20, 2020, 6:45 PM IST

কয়েক হাজার মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে । প্রার্থীদের মূল দাবি ছিল, বিভিন্ন প্রার্থীর টেটের মার্কস বাড়ানো হয়েছে । রুল অনুযায়ী ইন্টারভিউ লিস্ট বানানো হয়নি । 1:1.4 রেশিও মানা হয়নি ।

Calcutta High Court
Calcutta High Court

কলকাতা 20 নভেম্বর : শেষ হল আপার প্রাইমারি মামলার শুনানি । খুব শীঘ্রই হতে পারে এই মামলার রায়দান ৷ এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারপতি । আগের শূণ্যপদ ছাড়াও নতুন প্রায় 5100টি শূণ্যপদ তৈরি হয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে আগেই জানিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন । নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর যে স্থগিতাদেশ রয়েছে তা যদি উঠে যায় এই মামলার রায়ে তাহলে বড় সংখ্যক প্রার্থী নিয়োগের ছাড়পত্র পেয়ে যাবে স্কুল সার্ভিস কমিশন ।

মামলাকারী ভানু রায় সহ একাধিক চাকরিপ্রার্থী আপার প্রাইমারি 2016 সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে, তাতে মেধাতালিকায় বড়সড় কারচুপির অভিযোগে মামলা করেন কলকাতা হাইকোর্টে । কয়েক হাজার মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে । প্রার্থীদের মূল দাবি ছিল, বিভিন্ন প্রার্থীর টেটের মার্কস বাড়ানো হয়েছে । রুল অনুযায়ী ইন্টারভিউ লিস্ট বানানো হয়নি । 1:1.4 রেশিও মানা হয়নি । ফলে বহু মেধাবী প্রার্থী বঞ্চিত হয়েছে । মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যর সিঙ্গল বেঞ্চে বিচারাধীন ছিল । এই মামলারই শুনানি শেষ হল আজ । যদিও মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী ফিরদৌস শামীম বলেন,"এখনো নম্বর বেশি বেশি পেয়েছে এরকম অনেক প্রার্থীর ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন করা হয়নি ।" এর উত্তরে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন," ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন এর সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গেছে ।"

বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য অবশ্য এতে কোনও মন্তব্য করেননি । তিনি দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর মামলাটির রায়দান আপাতত স্থগিত রাখেন । তবে, এই মামলার রায়দান খুব শীঘ্রই হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারপতি এমনটাই জানালেন আইনজীবীরা । এর আগে 22 জুন এই মামলাটিতেই মামলাকারীদের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি বিবেক চৌধুরি নির্দেশ দেন, এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্কুল সার্ভিস কমিশন কোনও প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দিতে পারবে না । ফলে আপার প্রাইমারির মেধাতালিকা প্রকাশিত হলেও হাইকোর্টের নির্দেশে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায় । এই পরিস্থিতিতে হতাশ চাকরিপ্রার্থীরা গত 21 সেপ্টেম্বর আপার প্রাইমারি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেন ।

কোভিড-19 কারণে সৃষ্ট লকডাউনে দীর্ঘ প্রায় চার মাস ধরে কলকাতা হাইকোর্টে আপার প্রাইমারি মামলার শুনানি হয়নি ৷ তাই দ্রুত মামলার শুনানি করে নিষ্পত্তি করা হোক দাবিও জানান চাকরিপ্রার্থীরা । এই পরিস্থিতিতে গত 13 অক্টোবর আপার প্রাইমারি মামলার শুনানি পূজার ছুটির আগেই শেষ করতে চায় আদালত বলে জানান বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য । বিচারপতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী ও মামলাকারীদের আইনজীবী দেরকে অনুরোধও জানান তাঁরা যাতে দ্রুত তাঁদের বক্তব্য শেষ করেন । 2016 সালের পরীক্ষার ভিত্তিতে আপার প্রাইমারিতে যে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে তাতে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে বলে মামলার শুনানিতে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন মামলাকারীদের তরফের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামীম । বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চে আইনজীবীরা একটি CD জমা করেন । যাতে দেখানো হয়েছে কিভাবে ইন্টারভিউয়াররা পেনে সই করেছেন । আর পেন্সিলে প্রার্থীদের মার্কস বসানো হয়েছে । এর ফলে যাঁরা একাডেমিকে কম নম্বর পেয়েছেন তাঁদের ইন্টারভিউতে বেশি নম্বর দিয়ে মেধাতালিকায় সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে । এবং যাদের একাডেমীকে তুলনায় বেশি নম্বর তাঁদের ইন্টারভিউতে কম নম্বর দিয়ে বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা । নমুনা হিসাবে রাজিব নন্দী ও রাজা নন্দী নামে নদীয়া জেলার দুজন প্রার্থীর নাম উঠে আসে মামলার শুনানিতে । রাজীব নন্দী, রাজা নন্দীর থেকে দুই নম্বর বেশি পেলেও তাঁকে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন এ ডাকা হয়নি । অথচ রাজা নন্দীর নাম মেরিট লিস্টে রয়েছে । সমস্ত কিছুর পরিপ্রেক্ষিতে মহামান্য বিচারপতি কি রায় দেন এই মামলার সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details