কলকাতা, 7 জুন : আজকের মত শেষ হল নারদ মামলার শুনানি ৷ আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারোটাই ফের শুনানি শুরু হবে বলে হাইকোর্ট সূত্রে খবর ৷ কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে আজ নারদ মামলার শুনানি চলছিল । মূলত নারদ মামলা রাজ্য থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই তার উপরেই চলে সওয়াল জবাব ।
গত শুক্রবার বলা শেষ করেছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা । আজকে চার অভিযুক্তর তরফে বলেন অভিষেক মনু সিংভি । অভিষেক মনু সিংভি এ প্রসঙ্গে বলেন, "সলিসিটর জেনারেল সিবিআইয়ের তরফে একটাই বক্তব্য বারবার বলেছেন আর তা হচ্ছে মবোক্রেসি ।"
তিনি আরও বলেন, "রাজ্যপাল সিবিআইকে 7 মে অনুমতি দেওয়ার পর নতুন ক্যাবিনেট শপথ নেয় 10 মে । এরপর 17 মে চার্জশিট জমা করার পরই চার নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয় । সুতরাং এদের পালিয়ে যাওয়ার প্রশ্ন কোথা থেকে আসছে ?’’ এবার সেই প্রশ্নই তুললেন অভিষেক মনু সিংভি । তাঁর সওয়াল, "অভিযুক্তদের একজন 2011 সাল থেকে মন্ত্রী । পঞ্চাশ বছর ধরে একজন বিধায়ক । যদি তাঁরা প্রমাণপত্র লোপাট বা তথ্য বিকৃত করার চেষ্টা করতে চাইতেন তাহলে 2014 সাল থেকে এত দিন কিছু করতে পারতেন না ? তাঁরা কতটা অসহযোগিতা করেছেন ?"
অভিষেক মনু সিংভি আরও বলেন, "এখানে যত তথ্য পাওয়া গেছে তা অভিযুক্তদের পক্ষেই যাবে এবং সেগুলো তাঁদের জামিন দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ।"
এরপর পি চিদম্বরমের মামলার উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছিল সুপ্রিম কোর্ট । কয়েক বছর আগে নারদ মামলায় অভিযুক্তরা ভয়েস স্যাম্পল দিয়েছেন । ভোটের পরেই এঁদের গ্রেফতার করা হল । এই মামলার তদন্তকারী অফিসার পর্যন্ত লিখেছেন এঁদের বিরুদ্ধে তদন্তের কাজ শেষ হয়ে গেছে ।"
গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তোলার ব্যাপারে তাঁর জবাব, "সিবিআইয়ের গ্রেফতারি নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলছি না, কিন্তু যেকোনও সাধারণ গ্রেফতারি ড্রাকোনিয়ান ব্যাপার হতে পারে । সিবিআইয়ের তরফে এতদিন এত কথা বলেছেন সলিসিটর জেনারেল ৷ তিনি জামিনের বিরোধিতা করেননি আইনি পথে । প্রথম থেকেই তাঁর বক্তব্য গ্রেফতারের পর যে ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে ৷ তিনি বারবার সেই কথাই উল্লেখ করে গেলেন । আর যদি মবোক্রেসির কথা বলা হয় তার মানে হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গকারী বিপুল জনতার দ্বারা বেআইনি কাজ করা হয়েছে ।"
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, "সেদিন মুখ্যমন্ত্রী, বিধায়করা বাইরে এসেছিলেন তাঁদের সতীর্থদের সমর্থনে সহমর্মিতা ব্যক্ত করতে । তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, "আইনমন্ত্রী কেন বাইরে এসেছিলেন ? সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিদের প্রতিবাদকে সহজে আদালত নিতে পারে ?"
এর উত্তরে বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কি ধরনের মবোক্রেসি হলে আদালত প্রভাবিত হয় বলে আপনি মনে করেন ?"
তখন সিংভি প্রত্যুত্তরে জানান, 1984 সালে দিল্লি এবং 2002 সালে গুজরাট ছিল এর উদাহরণ ৷ কিন্তু তারপরও আদালত তাতে প্রভাবিত হয়নি ।
এভাবেই নারদ মামলায় আইনজীবীদের মধ্যে চলা সওয়াল জবাব আজকের মত শেষ হল ৷ আগামীকাল সকাল সাড়ে এগারোটায় ফের এই মামলার শুনানি শুরু হবে ৷