কলকাতা, 18 অগাস্ট : বেসরকারি স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠনের খরচ খতিয়ে দেখতে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করল কলকাতা হাইকোর্ট । বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই নির্দেশ দিয়েছে ।
বেসরকারি স্কুলে পঠন-পাঠনের খরচ খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন কলকাতা হাইকোর্টের
বেসরকারি স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠনের খরচ খতিয়ে দেখতে দুই সদস্যের কমিটি গঠন কলকাতা হাইকোর্টের ৷ সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর এই কমিটি হাইকোর্টকে তাদের রিপোর্ট পেশ করবে। কমিটিতে আজ রাজ্যের তরফে গোপা দত্তের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে ।
কোরোনা পরিস্থিতিতে অধিকাংশ স্কুল অনলাইনে পড়াশোনা চালাচ্ছে । তাই স্কুলগুলির খরচ খতিয়ে দেখতে গতকাল দুই সদস্যের কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট । বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই কমিটিতে হাইকোর্টে মনোনীত একজন থাকবেন, অপরজন থাকবেন রাজ্যের প্রতিনিধি। হাইকোর্টের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে বিচারপতি গতকালই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের নাম প্রস্তাব করেছিলেন । পাশাপাশি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনেরালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বোর্ডের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধানকে এই কমিটিতে নিযুক্ত করার জন্য । এই কমিটি চাইলে কোনও অ্যাকাউনট্যান্ট বা চাটার্ড অ্যাকাউনট্যান্টকেও নিযুক্ত করতে পারে তাদের কাজের সুবিধার জন্য। তারপরই আজ রাজ্যের তরফে গোপা দত্তের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে ।
7 জুলাই বিনীত রুইয়া প্রায় 15 হাজার অভিভাবকের প্রতিনিধি হিসেবে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ৷ তাঁদের মূল দাবি, বিগত চার থেকে পাঁচ মাস স্কুল বন্ধ থাকলেও ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে রেগুলার ফি দাবি করা হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির তরফে । অভিভাবকদের দাবি, কিছু ফি মকুব করুক স্কুলগুলি। হাইকোর্টে বিনীত রুইয়া জানান, যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীর ফি বকেয়া রয়েছে তাদের অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হচ্ছে না । এই নিয়ে 7 জুলাই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন বিনীত রুইয়া ৷ কিন্তু, কোরোনা পরিস্থিতির জেরে কলকাতা হাইকোর্ট কিছুদিন বন্ধ থাকায় কোনও মামলার শুনানি হচ্ছিল না । বাধ্য হয়ে মামলাকারীরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন । কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি হাইকোর্টে ফেরত পাঠিয়েছে দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়ে।
21 জুলাই হাইকোর্ট নির্দেশে দেয়, সামান্য ফি বকেয়া থাকলে কোনও ছাত্র-ছাত্রীকে অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত করা যাবে না । সেই সঙ্গে 31 জুলাই পর্যন্ত যত ফি বকেয়া রয়েছে 15 অগাস্টের মধ্যে তার 80 শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও মৌসুমি ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। 10 অগাস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে হাইকোর্ট জানায়, 15 অগাস্ট এর মধ্যেই স্কুল ফি-র 80 শতাংশ মেটাতে হবে। না হলে অনলাইন ক্লাস নিয়ে নিজেদের মতো করে পদক্ষেপ করতে পারবে বেসরকারি স্কুলগুলি। যার জেরে স্বভাবতই অভিভাবকদের উপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়। এরপরই এই মামলার শুনানিতে গতকাল কলকাতা হাইকোর্ট বেসরকারি স্কুলগুলির পঠন-পাঠনের খরচ খতিয়ে দেখতে দুই সদস্যের কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয় । আজ সেই কমিটি গঠন করে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর এই কমিটি হাইকোর্টকে তাদের রিপোর্ট পেশ করবে।