পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

By

Published : Nov 9, 2019, 4:50 AM IST

ETV Bharat / state

মোবাইল নিয়ে মাধ্যমিকের পরীক্ষাকেন্দ্রে না ঢোকার প্রস্তাবে সম্মতি শিক্ষক সংগঠনগুলির

গত বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ । পরীক্ষা কী করে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়, সেই বিষয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যের শিক্ষক সংগঠনগুলির সঙ্গে আজ বৈঠক করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ । জানা গেছে, সেখানে একটি শিক্ষক সংগঠন প্রস্তাব দিয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকবে না । সেই প্রস্তাবে বৈঠকে উপস্থিত বাকি শিক্ষক সংগঠনগুলি সায় দিয়েছে ।

মধ্য শিক্ষা পর্ষদ

কলকাতা, 9 নভেম্বর : গত বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ । ভাবা হচ্ছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ রুখতে হাতে ধরা মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করার । এরই মধ্যে পরীক্ষা কী করে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়, সেই বিষয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যের শিক্ষক সংগঠনগুলির সঙ্গে আজ বৈঠক করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ । জানা গেছে, সেখানে একটি শিক্ষক সংগঠন প্রস্তাব দিয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকবে না । সেই প্রস্তাবে বৈঠকে উপস্থিত বাকি শিক্ষক সংগঠনগুলি সায় দিয়েছে । প্রতিটি শিক্ষক সংগঠনই শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে সুষ্ঠুভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনা করায় সর্বতোভাবে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে ।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের ডাকা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রায় সব রেজিস্টার্ড শিক্ষক সংগঠন । বিকেল 4টে থেকে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠক চলে । মূলত, 2020 সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা কী করে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় সেই বিষয়েই আলোচনা হয়েছে । তার মধ্যেও যে বিষয়টি নিয়ে প্রধানত আলোচনা হয়েছে সেটা হল, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন । 2019 সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরপর ছয়টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষা চলাকালীন বাইরে বেরিয়ে গেছিল । যা নিয়ে রীতিমতো সমালোচনার ঝড় বয়েছিল গোটা রাজ্যে । আগামী বছরের পরীক্ষায় যাতে সেই ধরনের ঘটনা না ঘটে তার জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয় শিক্ষক সংগঠনগুলির কাছ থেকে । একটি সংগঠন প্রস্তাব দেয়, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ঢুকবেন না । গত বছর পর্যন্ত মোবাইল নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারতেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা । তবে, সেই ফোনগুলো জমা থাকত প্রধান শিক্ষকের ঘরে । ফোন নিয়ে না ঢোকার প্রস্তাবে উপস্থিত বাকি শিক্ষক সংগঠনগুলি সায় দিয়েছে বলে জানা গেছে ।

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র আজকের বৈঠক নিয়ে বলেন, "মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি অনেকদিন পর সব শিক্ষক সংগঠনকে ডেকেছেন । আমরা আমাদের কথাগুলো বললাম । আমাদের সমস্যার কথাগুলো বললাম । সভাপতি আমাদের কিছু কথা বললেন । আমরা সবাই একমত হয়েছি, মাধ্যমিক পরীক্ষাটাকে যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যায়, তার জন্য আমরা সবাই সর্বতোভাবে পর্ষদকে প্রতিবছরই সহযোগিতা করি, এ বছরও করব । সভাপতি কিছু কিছু উদাহরণ তুলে ধরেছেন, যেখানে পশ্চিমবঙ্গে লক্ষ লক্ষ শিক্ষকের মধ্যে এক-দুজন শিক্ষক নিয়ম-নীতি না মেনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র বাইরে বের করে দেন । সেটা যদিও সংখ্যায় কম তবুও এটা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে । আমরা সবাই তাঁকে বলেছি, শিক্ষকদের উপর ভরসা রাখুন ৷ প্রধান শিক্ষকদের উপর ভরসা রাখুন । আমরা আগামী দিনে মাধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য সমস্ত রকম দায়-দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত । সহযোগিতাও করব । উনি মূলত পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার নিয়েই বলেছেন ।"

নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, "আমাদের সাহায্য চেয়েছেন । আমরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছিলাম, সব তিনি মানেননি । তিনি এমন একটি উদাহরণ দিলেন, যেন মোবাইল থেকেই সবকিছু হয়ে যাচ্ছে । মোবাইলের মাধ্যমে সবকিছু যেন বেরিয়ে যাচ্ছে । তিনি মোবাইলে নিষেধাজ্ঞা জারি করবেন বলে আমাদের বলেন । এবিষয়ে আমাদের সাহায্য চান । আমরা বলেছি সুষ্ঠু পরীক্ষা পরিচালনার জন্য আমাদের যা সাহায্য করা দরকার সেটা আমরা পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে করব । শুধু ছাত্রছাত্রীদের নয়, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মোবাইলে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চাইছেন । পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না শুধুমাত্র তিন-চারজন যাঁরা পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকেন তাঁদের বাদ দিয়ে । আমরা বললাম, ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত চিন্তা করে যদি মনে করেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মোবাইল আনা বন্ধ করে দিয়ে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা হবে সেটা ভালো । পর্ষদ এব্যাপারে কোনও সার্কুলার দিলে আমরা তার বিরোধিতা করব না । কিন্তু, বোর্ড একটু ভেবে দেখবে, এই সার্কুলার জারি করলে শিক্ষকদের মনে যেন কোনো আঘাত না আসে ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details