কলকাতা, 15 নভেম্বর : দীর্ঘ 19 মাস পর মঙ্গলবার থেকে খুলছে রাজ্যের স্কুল-কলেজগুলি৷ স্কুলগুলিতে আপাতত শুরু হচ্ছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস ৷ তবে কতজন পড়ুয়া আদতে স্কুলে আসবে তা নিয়ে সংশয় দানা বেঁধেছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মনে।
স্কুলগুলিতে ফের পঠন-পাঠন শুরু হলেও কঠোরভাবে মানতে হবে কোভিড বিধি। ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর ৷ তবে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের স্কুলে আসতে বাধ্যকরা যাবে না। অভিভাবকরা স্বেচ্ছায় তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠালে তবেই আসবে তারা।
এবিষয়ে, অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন,"শিক্ষামন্ত্রী যে ঘোষণা করেছেন এর ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে আসার ব্যাপারে যে উৎসাহ দেখিয়েছিল তা অনেকটাই কমেছে। স্কুলে আসার ব্যাপারে তারা নিরুৎসাহিত হয়েছে। ক্লাস করতে ইচ্ছুক ছাত্র-ছাত্রী ও অনিচ্ছুক ছাত্র-ছাত্রীদের ভিত্তিতে শ্রেণি বিভাজন করা হলে স্কুল চালানো মুশকিল হবে। এর ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের ইন্টার্নাল অ্যাসেসমেন্ট ও সার্বিক উন্নতির দিকগুলি যা স্কুলের উপর নির্ভর করে তা বাধাপ্রাপ্ত হবে। তাই আমরা মনে করি যে অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রীকে তাঁর বিবৃতি প্রত্যাহার করে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে স্কুলে আসে এবং নিরাপত্তাজনিত বিধিনিষেধগুলি যাতে সুনিশ্চিত করা যায় সেই বিষয়টির উপরে জোর দিতে হবে।"
আরও পড়ুন : Schools Reopen: ঝুঁকি নিতে নারাজ বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ, হাইব্রিড মোডে চলবে ক্লাস
তবে রাজ্যে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ কিছুটা নিম্নমুখী হলেও এখনও পুরোপুরিভাবে কাটেনি সংক্রমণের ভয়। বড়দের টিকাকরণের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলেও বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এখনও টিকাকরণ শুরু হয়নি। তাই কোন রকম ঝুঁকি নিতে চায় না রাজ্য সরকার। এবিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, "আমরা যতটা দেখছি তাতে মনে হয় যে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে আসতে উদগ্রীব। আমাদের বিশ্বাস আগামিকাল থেকে সবাই পুরোদমেই আসবে। তবে আমরা যেটা লক্ষ্য করছি যে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরা বা উচ্চ-মধ্যবিত্ত সন্তানরা যেহেতু পরিবার থেকে সমর্থন পেয়ে যায় তাই তাদের অভিভাবকরা অনেক সময় স্কুলে নাও পাঠাতে পারেন। যেহেতু এদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল ও অন্য বিকল্প রয়েছে তাই তারা স্কুলে নাও উপস্থিত থাকতে পারে। তবে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের এইধরনের কোনও বিকল্প উপায় নেই। তাই তাদের পরিবারের সন্তানরা আগামিকাল থেকে স্কুলে আসবে বলেই আশা করা যায়। শিক্ষকরাও চাইছেন যাতে বিদ্যালয়গুলি আবার খুলে যায় ও ছাত্রছাত্রীরা পুরোদমে ক্লাসে বসে ক্লাস করে।" তবে যে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে আসবে না তাদের জন্য আগে যেমন অনলাইন ক্লাস চলতো তেমনই চলবে।