কলকাতা, 22 অগস্ট: রাজ্য সরকারের ভাতা দেওয়ার নীতিকে কটাক্ষ করতে গিয়ে সত্যজিৎ রায়ের স্মরণাপন্ন হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ সোমবারই ইমাম, মোয়াজ্জেম ও পুরোহিতদের ভাতা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আর তার পরদিনই সেই নিয়ে শুভেন্দু নিশানা করেছে রাজ্য সরকারকে ৷ আর এ ক্ষেত্রে তিনি হাতিয়ার করেছেন পথের পাঁচালিকে ৷
মঙ্গলবার সকালে সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী চলচ্চিত্র পথের পাঁচালির কয়েকটি দৃশ্যের ছবির একটি কোলাজ পোস্ট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ তবে সেই ছবির সংলাপগুলিকে বদলে দিয়ে বর্তমান প্রেক্ষাপটের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি ৷
এই কোলাজ পোস্ট করে ক্যাপশনে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, "প্রথমেই মার্জনা চেয়ে নিচ্ছি বাঙালির সাংস্কৃতিক সত্ত্বার সঙ্গে একাত্ম, অসামান্য কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস 'পথের পাঁচালী' অবলম্বনে নির্মিত, বিশ্ববন্দিত পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্রের কয়েকটি দৃশ্যের আলোকচিত্ৰ ব্যবহার করে রাজ্যের বর্তমান আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি বোঝানোর জন্য ৷"
শুভেন্দুর পোস্ট করা কোলাজে পথের পাঁচালির বিখ্যাত চরিত্র হরিহরের একটি ছবিতে সংলাপে লেখা হয়েছে, "আর এই রাজ্যে থাকা যাবে না ৷ কাশী চলে যাব সবাই ৷" রাজ্য সরকারের ভাতা প্রদানের নীতিকে কটাক্ষ করে হরিহরের মুখে আরও সংলাপ বসানো হয়েছে ৷ যেখানে হরিহর বলছে, "আমরা না হয় ভাতাজীবী হয়ে রয়ে যাব, অপুর ভবিষ্যতের কী হবে ৷ এই রাজ্যে তো উন্নয়ন এবং শিল্প স্তব্ধ ৷ তার জন্য হয় বেকারত্ব নয় পরিযায়ী শ্রমিকের জীবন অপেক্ষা করবে এখানে থাকলে ৷"
আরও পড়ুন:ইমাম ও মোয়াজ্জেম ভাতা 500 টাকা বাড়ালেন মমতা
ছবিতে হরিহরের স্ত্রী সর্বজয়ার কান্নার একটি দৃশ্য তুলে ধরেছেন শুভেন্দু ৷ সেখানে সর্বজয়ার সংলাপে লেখা হয়েছে, "ভিটে মাটি ছেড়ে চলে যাব ? মুখ্যমন্ত্রী তো পুরোহিতদেরও মাসিক ভাতা 500 টাকা করে বাড়ানোর কথা বলেছেন ৷" উল্লেখ্য, পথের পাঁচালিতে নিশ্চিন্দপুর নামক গ্রামের বাসিন্দা হরিহর একজন ব্রাহ্মণ ৷
ইন্দিরা ঠাকরুণ, দুর্গার মৃত্যুর পর মনের দুঃখে ছোট্ট ছেলে অপু ও সর্বজয়াকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যান হরিহর ৷ সেই দৃশ্যের একটি ছবি কোলাজে রেখেছেন শুভেন্দু ৷ সেখানে হরিহরের ভাবনায় লেখা হয়েছে, "জন্মালে ভাতা, মরলে ভাতা, মাথা উঁচু করে বাঁচার উপায় খুঁজে পাওয়ার বেলায় অন্যথা ৷" কোলাজের শেষে পথের পাঁচালির বিখ্যাত ট্রেনের দৃশ্য দিয়ে সমাপ্ত লেখা রয়েছে ৷