কলকাতা, 19 অগস্ট: খড়গপুর আইআইটি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার খবরের শিরোনামে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ। বিশ্বজিৎ হাজরা নামে কলেজের এক ছাত্রকে টানা ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। তবে বার বার ব়্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা সত্ত্বেও পাত্তা দেয়নি পুলিশ ৷ শেষমেশ যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পর থেকে তৎপরতা দেখা গিয়েছে পুলিশের। শেষে এফআইআর দায়ের করেছে বিশ্বজিৎ ৷ শুরু হয়েছে তদন্তও ৷
2019 সালে বিশ্বজিৎ বীরভূম থেকে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে বি-টেক পড়তে আসে। সে জানায়, তখন থেকেই তার উপর ব়্যাগিংয়ের নামে অত্য়াচার চলত। সেখানে কলেজ হস্টেলের প্রাক্তনীরা থাকত বলেও জানায় সে। মূলত প্রাক্তনীরাই নতুন পড়ুয়াদের উপর এই অত্যাচার চালাত বলে জানা গিয়েছে। বিশ্বজিতের বক্তব্য, বাইরে থেকে মদ কিনে আনা, জোর করে মদ খাওয়ানো, মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার করা, রুমের মধ্যে বাজি ছুড়ে মারা, এমনকী তিনতলার উপর থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর।
বিশ্বজিতের অভিযোগের তির তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের দিকে। মাত্র দু'সপ্তাহ হল কলেজ থেকে পাশ করেছে সে। তারপরই সে এই ব়্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে থানায়। জানা গিয়েছে, প্রথম থেকেই এই ঘটনার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করে আসছিল বিশ্বজিৎ। প্রথমে কলেজ কর্তৃপক্ষ, তারপর স্থানীয় থানা, পরের দিকে লালবাজার কোথাও বাদ দেয়নি সে। কিন্তু সেই সময় পুলিশ তার অভিযোগকে পাত্তা দেয়নি বলেই দাবি বিশ্বজিতের ৷ লকডাউনের পর ফের যখন কলেজ শুরু হয় তখন থেকে আবারও তার উপর শুরু হয় অত্যাচার। বিশ্বজিৎ জানিয়েছে, যাদবপুরের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সে কারণেই তাকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। এদিন বিশ্বজিতের অ্যাডভোকেট শিবাশিস পট্টনায়ক জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গোপন বয়ান দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছে বিশ্বজিৎকে। বিশ্বজিতের করা এফআইআরে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাক্তির নামও উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার শান্তশিষ্ট নাসিম ছিলেন 'গ্রামের গর্ব' !
জানা গিয়েছে, হস্টেলে এমন কিছু ব্যক্তি থাকতেন যারা কলেজের ছাত্র নন, প্রাক্তনীও নন। শহরে তারা ব্যবসা করতেন আর থাকতেন বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের হস্টেলে। আর ব়্যাগিংয়ের পিছনেও সেই ব্যক্তিরাই দায়ী বলে অভিযোগ। তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ টিএমসিপি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য কমিটির সদস্য অভিরূপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এই অভিযোগ একেবারেই মিথ্যে। তাঁর কথায়, "আমি চাই সিসিটিভি খতিয়ে দেখা হোক। ছেলেটি অভিযোগ করেছে ওকে নাকি খাবার দেওয়া হত না। হস্টেলে খাবারের দায়িত্ব থাকে মেস কমিটি। মাসের পর মাস ছেলেটি মেস কমিটির টাকা দেয়নি। আবার ছেলেটিকে নাকি পাশ করার আগে পর্যন্ত ব়্যাগিং করা হয়েছে। আমার প্রশ্ন একটাই, একটা চতুর্থ বর্ষের বি-টেকের ছাত্রকে কীভাবে একজন প্রথম বর্ষের পড়ুয়া ব়্যাগিং করতে পারে?"