কলকাতা, 19 ডিসেম্বর: রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত । এই আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া (Land for Border Fencing) দেওয়ার কাজ দ্রুত শেষ করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার । শনিবার নবান্ন সভাঘরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সীমান্তে কাঁটাতার এবং আউটপোস্টের জন্য জমি সমস্যার সমাধানে রাজ্যের সাহায্য চেয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক । যতদূর জানা যাচ্ছে, এই কাজে সীমান্তরক্ষী বাহিনী অর্থাৎ বিএসএফকে সাহায্য করবে রাজ্য সরকার । এবং ইতিমধ্যেই এই নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে রাজ্য প্রশাসন ।
এ বার সীমান্তে বেড়া দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণের কাজ দ্রুত সম্পাদনে জেলা প্রশাসনকে সাহায্যের জন্য বলল নবান্ন (Mamata Banerjee)। পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে এই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শেষ করার জন্য মার্চ পর্যন্ত সময়সীমার কথা বলা হয়েছিল । যতদূর জানা যাচ্ছে, রাজ্য সরকার চাইছে যৌথ উদ্যোগে এই কাজ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সম্পাদন করতে । আর সেই কারণেই জেলা প্রশাসনকে বিএসএফকে এই কাজে সাহায্য করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর ।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে শনিবারের বৈঠকে সীমান্ত সমস্যা এবং সীমান্তে চোরা চালানের বিষয়টি আলোচনায় অগ্রাধিকার পেয়েছিল । সেখানে বিএসএফের তরফ থেকে বলা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে 257 কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ভারত এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত । এর মধ্যে 186 কিলোমিটার এলাকায় ইতিমধ্যেই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া সম্ভব হলেও জমি না মেলায় 70 কিলোমিটারে এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না । কাজেই এই 70 কিলোমিটার এলাকায় রাজ্যকেই জমি অধিগ্রহণ করে দিতে হবে । ওই বৈঠকে রাজ্যের তরফেও এই বিষয়টি নিয়ে সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয় । যতদূর খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে শনিবারের পর রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় সোমবারই এই নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করল নবান্ন । রাজ্য প্রশাসনের এই তৎপরতা যদি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়, দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার যে কাজ ঝুলে রয়েছে তা দ্রুত সম্পাদন করা সম্ভব হবে বলেই মনে করা হচ্ছে । যদিও রাজ্য সরকার চাইছে, কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার আগেই কাঁটাতারের বেড়ার জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করতে । যেহেতু এর সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে, তাই এই বিষয়ে কোনও ঢিলেমি বরদাস্ত করতে রাজি নয় নবান্ন ।
আরও পড়ুন:ফের রাজ্যকে স্বীকৃতি কেন্দ্রের, দেশের সেরা প্রকল্পের পুরস্কার পাচ্ছে দুয়ারে সরকার
আরও একটা বিষয়ে এ ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ৷ শনিবারের বৈঠকে রাজ্যের তরফ থেকে চোরাচালান রুখতে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ভূমিকার সমালোচনা করা হয়েছিল রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে । এ বার নবান্ন দেখতে চাইছে যে রাজ্যের সব ধরনের সহযোগিতার পর রাজ্যের অভিযোগের বিষয়গুলি নিয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী । প্রসঙ্গত, সীমান্তে আউটপোস্ট ও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কোনওভাবেই বিএসএফকে সাহায্য করছে না বলে শনিবারই সরব হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও । সে ক্ষেত্রে তাঁর অভিযোগ ছিল, এমনটি করে রাজ্য আসলে সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ হোক সেটা চাইছে না । তারা বিষয়টিকে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রচারে তুলে আনতে চেয়েছিল । কিন্তু এই অভিযোগের 48 ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের এই পদক্ষেপের পর বিরোধী দল কী অবস্থান নেয়, সেটাই এখন দেখার ।