কলকাতা, 6 জুলাই:রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা নিয়ে ফের সংশয় ঘনীভূত হয়েছে ৷ মোট 60 হাজার 593টি বুথ থাকছে এবার ভোটে ৷ আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন, প্রতি বুথে কীভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে মোতায়েন করা সম্ভব? সেই সঙ্গে, আদৌ 8 জুলাইয়ের আগে সব কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে এসে পৌঁছবে কি না, তা নিয়েও কাটলো না জট।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী প্রতি বুথেই দিতে হবে একজন করে সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ৷ সেইসঙ্গে রাখতে হবে আরও একজন সশস্ত্র রাজ্য পুলিশের এক কর্মী। পাশাপাশি এদিন আদালতে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, 8 তারিখ সকালের মধ্যেই এসে পৌঁছতে পারে বাকি কেন্দ্রীয় বাহিনী ৷ তবে অন্তত 80 শতাংশ কেন্দ্রীয় বাহিনী তার আগেই 7 জুলাই রাজ্যে এসে যাবে ৷ অন্যদিকে, বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে এদিন রাত 9টায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে রাজীবা সিনহার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসার বুধাকোটি। কমিশন সূত্রে খবর, যে বুধাকোটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে বাহিনী সংক্রান্ত বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাকি মাত্র একদিন ৷ কিন্তু কীভাবে প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে সেই রূপরেখা আবারও প্রশ্নের মুখে। ভোটের সময়ের মধ্যে যদি সম্পূর্ণ সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে এসে না-পৌঁছতে পারে সে ক্ষেত্রে 80 শতাংশ যা নির্দিষ্ট ভাবে রাজ্যে এসে পৌঁছবে তা দিয়েই ভোট করাতে হবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। তবে সেক্ষেত্রে প্রতি বুথে একজন করে সশস্ত্র রাজ্য পুলিশ আর একজন সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
অন্যদিকে, আদালত এদিন নির্দেশে জানিয়েছে, নির্বাচন গণনার পরও আরও দশদিন রাজ্যে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে বিভিন্ন কারণবশত 652টি বুথ চত্বর মিলিয়ে মোট এক হাজার 43টি বুথে নির্বাচন হচ্ছে না। অর্থাৎ ভোট হচ্ছে প্রায় সাড়ে 60 হাজার বুথে। অন্যদিকে, কমিশন সূত্রে খবর, 822 কোম্পানির সমস্তটা রাজ্যে প্রবেশ করতে কিছুটা সময় লাগবে। তাই 8 জুলাইয়ের মধ্যে সম্পূর্ন বাহিনী প্রবেশ করতে না পারলে 80 শতাংশ বাহিনী যা রাজ্যে আসবে, সেই আশ্বাস দিচ্ছে কেন্দ্রের আইনজীবী।
যদি 80 শতাংশ বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হয় তবে সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে 658 কোম্পানি বাহিনী। যার মধ্যে সক্রিয় 80 জন হলে সংখ্যাটা হবে 52 হাজার 640 জন। তাহলে এখন সব চেয়ে বড় প্রশ্ন হল তাহলে যে কীভাবে এক জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা যাবে বুথে? তবে কমিশন জানিয়েছে, যে যদি সমস্ত বুথেই সশস্ত্র বাহিনী দিতে হয় তাহলে ধরে নেওয়া যায় যে প্রতি বুথই স্পর্শকাতর। দু'জন সশস্ত্র বাহিনী বুথে থাকলেই সেটা স্পর্শকাতর বুথ হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। সেই ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর বুথে শুধু অতিরিক্ত বাহিনী থাকবে না বটে তবে সেই ক্ষেত্রে কুইক রেসপন্স টিমের বাড়তি টহলদারির ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও বুথের বাইরে ভোটারদের লাইন ঠিক করার জন্য একজন লাঠিধারী সিভিক পুলিশ থাকবে।
আরও পড়ুন:পঞ্চায়েত ভোটের দিন নন্দীগ্রামে নিজের বুথের এলাকাতেই থাকতে হবে শুভেন্দুকে, নোটিশ পুলিশের
এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশন হাইকোর্টে জানিয়েছে যে 11 জুলাই এরপর বাহিনী থাকলে সেটা রাজ্যের দায়িত্ব। গণনার পরও রাজ্যে বাহিনী থাকলে কমিশনের হাতে তার দায়িত্ব থাকবে না। বিএসএফের আইজির সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহার সঙ্গে বৈঠকের প্রেক্ষিতে জানা গিয়েছে, যে আইজি বিএসএফ কোনওভাবেই এক সেকশনকে ভাঙতে চাইছে না। এমতবস্থায় কীভাবে প্রতি বুথে একজন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে সেটা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।