পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

SSC বিক্ষোভ : টাঙাতে দেওয়া হচ্ছে না ত্রিপল, রয়েছে শৌচালয়ের সমস্যাও - hunger strike

পরিস্থিতির চাপে পড়ে চাকরির পাশাপাশি অনশন বজায় রাখতে এবার ন্যূনতম চাহিদা পূরণের দাবি তুলতে কার্যত বাধ্য হচ্ছেন SSC প্রার্থীরা।

অসুস্থ অনশনকারী

By

Published : Mar 2, 2019, 8:57 PM IST

কলকাতা, ২ মার্চ : চাকরির দাবিতে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ধর্মতলায় অবস্থান বিক্ষোভ করছেন নবম থেকে দ্বাদশ স্তরের শিক্ষক নিয়োগের ওয়েটিং লিস্টে থাকা SSC প্রার্থীরা। ওইদিন রাতেই অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করেন তাঁরা। কিন্তু, পরিস্থিতির চাপে পড়ে চাকরির পাশাপাশি অনশন বজায় রাখতে এবার ন্যূনতম চাহিদা পূরণের দাবি তুলতে কার্যত বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।

বিগত কয়েকদিন ধরেই পরিবর্তন হয়েছে শহরের আবহাওয়া। রাতের বেলা যেমন ঠান্ডা, তেমনই দিনের বেলা প্রখর রোদ। এর ফলে এখনও পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আটজন অনশন ও অবস্থানকারী। শুধু তাই নয়, অসুস্থদের মধ্যে একজন পাঁচ মাসের গর্ভবতী। এই পরিস্থিতিতে অনশন বজায় রাখতে মাথার উপর একটি শেডের দাবি তুলছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, গতকাল সন্ধ্যায় একটি ছাউনি টাঙাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পাশাপাশি দিনের বেলা পে অ্যান্ড ইউজ় ব্যবহার করা গেলেও রাতের বেলা তা বন্ধ থাকায় অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আজ বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী আন্দোলনকারীদের খবর নিতে এলে তাকেও এই সমস্যার কথা জানানো হয়।

এবিষয়ে তানিয়া শেঠ বলেন, "এখনও পর্যন্ত মোট আটজন অসুস্থ হয়েছেন। আরও কিছু অসুস্থতার পথে রয়েছেন। সকালবেলা সুজন চক্রবর্তী এসেছিলেন। তিনি আমাদের কথা দিয়েছেন। বলেছেন আমাদের দাবিগুলো সরকারের কাছে জানাবেন। আমাদের সামনেই শিক্ষামন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। এখন দেখা যাক তিনি কী করেন।"

তানিয়া শেঠ আন্দোলনের দাবি নিয়ে বলেন, "আমরা SSC চাকরিপ্রার্থী। আমরা যখন পরীক্ষা দিই তখন কলকাতা গেজেট বলে ওরা একটি গেজেট দিয়েছিল। সেখানে পরীক্ষার নিয়ম কানুনগুলি লেখা ছিল। যখন রেজ়াল্ট বেরোচ্ছে তখন দেখা যাচ্ছে সেই নিয়ম কানুন ওরাই মানেনি। প্রথমত তাঁরা বলছেন রেশিয়ো মেনে নাকি ওঁরা প্যানেল তৈরি করবেন। কিন্তু যখন প্যানেল প্রকাশ হচ্ছে তখন দেখা যাচ্ছে কোথাও দুটো সিটের জন্য ৮২টা ওয়েটিং। কোথাও ৬টি সিটের জন্য ৭৯টা, ২৮টার জন্য ১০৫টা, এইরকম বিভিন্নভাবে রেশিয়োর ভায়োলেশন করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ওরা নিজেরা গেজেটে স্পষ্ট করে বলছে যখন ফলাফল বার করবে তখন ওরা লিখিত পরীক্ষা, ভাইবা ও অ্যাকাডেমিক স্কোর সমেত এবং প্রত্যেকটা বিষয় ও ক্যাটাগরি ধরে সিরিয়াল অনুযায়ী প্রকাশ করবেন। কিন্তু, যখন ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছে তখন দেখা যাচ্ছে কোনও নম্বর নেই। শুধু নামগুলো দিয়েছে। যার ফলে আমরা বুঝতে পারছি না আমরা আদৌ ওয়েটিং কি না। তৃতীয়ত, তাঁরা বলছেন লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার ১৫ দিন আগে পর্যন্ত সিট আপডেট করবেন। কিন্তু, DI অফিস মারফত ঘুরে যা তথ্য পেয়েছি তাতে দেখা যাচ্ছে প্রচুর সিট রয়েছে। অথচ কমিশন শুধু ডেটটা আপডেট করে দিচ্ছে। কিন্তু সিটটা আপডেট করছে না। এই নিয়মগুলো মানা হয়নি বলে কোর্টে কেস হয়েছে। ওনারা বলছেন, তোমরা কোর্টে যেও না। আমাদের সঙ্গে কথা বলতে এসো। কিন্তু, আমরা যখন কথা বলতে যাচ্ছি, আমরা সেখান থেকে কোনও সদুত্তর পায়নি। আমরা বার বার ডেপুটেশন দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এমনকী আমরা নবান্নেও গেছি। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িও গেছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। এখন আমরা এই সমস্ত জায়গা ঘুরে ঘুরে চরমপন্থী পন্থা অবলম্বন করতে বাধ্য হয়েছি।"

তানিয়া আরও বলেন, "আমাদের এখন একটাই দাবি। আমাদের এই দাবিগুলো মেনে নেওয়া হোক। তা ছাড়া, এতো কিছু হয়ে যাওয়ার পরও আমাদের যুক্তিগুলোকে ভিত্তিহীন বলছেন চেয়ারম্যান। ওরা নাকি রেশিয়ো মেনেছেন। আর বলছে যোগ্য প্রার্থী নাকি পাওয়া যায়নি। যোগ্য প্রার্থী যদি পাওয়া না যায় তাহলে আমরা কারা? সুতরাং, আমাদের দাবিগুলোকে মেনে নেওয়া হোক। আমাদের দাবিগুলো যে ভিত্তিহীন তা প্রমাণ করার জন্য নম্বর সমেত মেধা তালিকা প্রকাশ করা হোক। হয় আমাদের অনশনকারীদের চাকরি দেওয়া হোক। না হয় আমাদের মেরে‌ ফেলা হোক।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details