কলকাতা, 19 মে : কেটে গেছে এক বছরেরও বেশি সময় । বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন বাবা । তাই আজ খবরটা শুনে শিশু মন কোনও বাধা মানতে চায়নি । ছুট্টে চলে গেছিল বাবার কাছে । কিন্তু, মেয়ে সুহানির দিকে ফিরেও দেখলেন না কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় । মেয়েকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন বাবা । ছলছল চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে থাকল 15 বছরের সুহানি চট্টোপাধ্যায় ।
তখন ঘড়িতে সাড়ে তিনটে ছুঁইছুঁই । বেহালার পর্ণশ্রী শিশু ভারতী স্কুলের সামনে গাড়িটা আসতেই শুরু হয়েছিল গুঞ্জন । গাড়ি থেকে নেমে সোজা বুথের ভিতর ঢুকে যান প্রাক্তন মেয়র । খবর ততক্ষণে চাউর হয়ে গেছে । এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে চলছে ফিসফিসানি । বাইট পাওয়ার জন্য 'লড়াই' শুরু সংবাদমাধ্যমের ।
যে বাড়িটা বছর খানেক আগেও ছিল শোভনের নির্দিষ্ট ঠিকানা । শোভন আসার খবরটা পৌঁছতে দেরি হয়নি পর্ণশ্রীর সেই বাড়িটাতেও । খবর পেয়েই বুথের সামনে চলে আসে সুহানি । বুথ থেকে বের হতেই বাবার কাছে চলে এসেছিল মেয়েটা । কিন্তু, মেয়েকে যেন 'চিনতেই' পারলেন না বাবা । কেবল মিনিট খানেকের জন্য সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন । তারপরই গাড়িতে উঠে চলে গেলেন ।
পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হল বাবা চলে গেলেন । একটি বার ফিরেও তাকালেন না । বাবার এই আচরণে সুহানির শিশু মনের বাঁধ ভেঙে যায় । হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করে সে ।
সম্পর্কটা কিন্তু বছর কয়েক আগেও এমন ছিল না । ব্যক্তি শোভনের অনেকটাই জুড়ে ছিল সুহানি । স্ত্রী রত্নার সঙ্গে দূরত্ব যত বেড়েছে, ততই যেন মেয়েকে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি । বিতর্ক যত বেড়েছে, ততই শুধু 'বন্ধু' বৈশাখিময় হয়ে উঠেছে শোভনের জীবন । বিতর্কের জেরে মেয়র পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন । দলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে । একদা ছায়সঙ্গী শোভনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছেন মমতাও ।