কলকাতা, ৩ এপ্রিল : কোরোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যকে সহযোগিতা করছে না কেন্দ্র । সাহায্য চাওয়া হলেও কেন্দ্র কোনওরকম সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না । আজ ফের সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
আজ সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন , "লকডাউনে রাজ্যের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে । কিন্তু রাজ্যকে সাহায্য করেনি কেন্দ্র। মাস্ক পর্যন্ত দেয়নি। রাজ্য সরকার সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে । বাংলা যা করে দেখিয়েছে এটা একটা মডেল। "এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের পর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, "প্রধানমন্ত্রী সব শুনেছেন । রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানিয়েছি । কিন্তু কোনও আশ্বাস মেলেনি ।" আজ ফের একই সুর শোনা গেল তাঁর গলায় । কেন্দ্রের উদ্দেশে বলেন, "রাজনীতি বন্ধ করুন । কোরোনা নিয়ে কেউ কেউ রাজনীতি করছে । এখন রাজনীতি করার সময় নয় । সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে ।"
কয়েকদিন আগেই অর্থ বরাদ্দের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছিলেন মমতা। রাজ্যের জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকা দাবি করেছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরও কেন্দ্রের তরফে কোনওরকম পদক্ষেপ করা হয়নি বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর । প্রসঙ্গত, গতকাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী । কিন্তু সেখানে উপস্থিত ছিলেন না তিনি । নবান্ন সূত্রে খবর মমতা বলেন, বৈঠকে নতুন করে আর কিছু বলার নেই তাই মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে পাঠিয়েছিলেন তিনি । এরপর কোথাও যেন তাঁর ক্ষোভ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল । আজকের সাংবাদিক বৈঠকে আবার সেই অসহযোগিতার ইশুতেই সরব হলেন তিনি ।
গত দু'দিন ধরে রাজ্যে কোরোনা আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা নিয়ে রাজ্য সরকারের বক্তব্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, 3 জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল নবান্নে দফায় দফায় বৈঠক করেন সরকারের বিশেষজ্ঞ দল এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব। প্রথমে বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন কোরোনায় রাজ্যে আক্রান্ত 53 জন । মৃতের সংখ্যা 7 । তাঁদের দাবির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যসচিব জানান, কোরোনা আক্রান্ত 34 । মৃতের সংখ্যা 3 । আজও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে নিজের পুরোনো অবস্থানেই অনড় থাকেন মুখ্যমন্ত্রী । তবে রাজ্যের সামগ্রিক একটি তথ্য দেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কোরোনায় রাজ্যে আক্রান্ত 38 জন। সুস্থ হয়েছেন 12 জন। রাজ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন 4 জন। এপর্যন্ত 3 হাজার 218 জন হোম কোয়েন্টারাইনে আছেন। কালিম্পংয়ে একটা পরিবারের 10 জন আক্রান্ত। তেহট্টে একটা পরিবারের 6 জন আক্রান্ত।"
পাশাপাশি সাধারণ মানুষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কোরোনা হাসপাতাল তৈরিতে বাধা কেন ? মৃতদেহ সৎকার করতে বাধা কেন ? রাজ্যবাসীকে আরও মানবিক হতে হবে। রাজ্যে 59টি কোরোনা হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে।"