কলকাতা, 4 জুন: প্রাণের শহর ছেড়ে চাকরি সূত্রে গত তিন বছর ধরে নিজামের শহরের বাসিন্দা হয়ে গেছেন ৷ এখানকার বিশাল বিশাল মল, ঐতিহাসিক স্থান, বিরিয়ানি আর ভিন্ন ভাষার কোলাহলে মানিয়ে নিতে সময় লাগেনি ৷ কলকাতার মতোই ধীরে ধীরে চেনা শহরে পরিণত হয়ে গেছিল হায়দরাবাদও ৷ কিন্তু কোরোনা আক্রমণ যেন সেই চেনা শহরকেও অচেনা করে তুলেছে ৷ রাস্তাঘাট ফাঁকা, সবসময় ভীত সন্ত্রস্ত পরিবেশ ৷ বিমানবন্দরের পরিবেশও এখন আগেকার থেকে অনেক বদলে গেছে ৷ আন্তঃরাজ্য বিমান পরিষেবা শুরু হতেই হায়দরাবাদ থেকে কলকাতায় মায়ের কাছে ফিরে গেছেন পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অর্জুন রায় ৷ সেইসব অভিজ্ঞতা ETV ভারতের সঙ্গে শেয়ার করলেন তিনি ৷
বছর সাতাশের অর্জুনের কথায়, "সত্যিই এ এক আলাদা অভিজ্ঞতা । গত তিনবছর ধরে আমি হায়দরাবাদে থাকি । পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার । নিজামের শহরের সঙ্গে আমার পরিচয়, ভালোবাসা গত তিনবছর ধরে । কিন্তু হঠাৎ করেই যেন সবকিছু বদলে গেল । নতুন প্রজন্মের ছেলে আমরা । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, চিন ভারত যুদ্ধ, ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ,বাংলাদেশের স্বাধীনতা সবই আমাদের কাছে ইতিহাসের বিষয় । কিন্তু কোরোনা ভাইরাসের কারণে এমন এক যুদ্ধ শুরু হয়েছে যার অতীতের কোনও নজির নেই । এই অভিজ্ঞতা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেয়ে ভয়ংকর । অদৃশ্য শত্রু পুরো বিশ্বকে ঘরবন্দী করে ফেলেছে । ফলে একটা ঘরবন্দীর অস্বস্তিকর জীবন এখন সঙ্গী । যাতায়াতের মাধ্যম সবে খুলেছে । পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ট্রেন দেওয়া হয়েছে । কাতারে কাতারে মানুষ তাদের ঘরে ফিরছেন । আমিও ঘরে ফিরলাম । তবে বিমানে । এত পচিশ মে থেকে অন্তরাজ্য বিমান পরিষেবা শুরু হয়েছে । সুযোগ মিলতেই হাতছাড়া করতে চাইনি । ফলে নির্দিষ্ট বিমানে কলকাতার পথে বেরিয়ে পড়েছিলাম । আগেই বলেছি হায়দরাবাদ শহরের একটা স্পন্দন রয়েছে । কিন্তু আমি যেখানে থাকি সেই গোপানাপল্লী থেকে রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসার সময় চারিদিকে পথঘাট দেখে বিস্মিত হয়েছি । কে যেন জাদুকাঠির ছোঁয়ায় ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে ।"