কলকাতা, 10 মে:মণিপুরে হিংসার জন্য সরাসরি বিজেপিকে দায়ী করলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। বুধবার কলকাতায় দলীয় কর্মীদের স্মরণসভা শেষে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক স্পষ্টতই অভিযোগ করেছেন, হিংসা থামাতে সে রাজ্যের সরকার কোনও পদক্ষেপই করেনি ৷ সেইসঙ্গে, মণিপুরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার মূলেও বিজেপি রয়েছে বলে দাবি করেছেন বর্ষীয়ান নেতা ৷
এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ইয়েচুরি বলেন, "মণিপুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। হিংসা দমাতে রাজ্য সরকারের কোনও পদক্ষেপ দেখছি না। বিজেপি সরকার বিভাজনের রাজনীতি এবং বিভেদমূলক রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে। যার ভবিষ্যৎ খুবই ভয়ংকর।" কেন্দ্রে বিজেপি সরকারকে নিশানা করে সীতারাম ইয়েচুরি আরও দাবি করেছেন, বিজেপির তরফে হিন্দু এবং খ্রিস্টানদের মধ্যে এমনভাবে কিছু বিষয় পেশ করা হচ্ছে, যা সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের চেহারা নিচ্ছে। সেইসঙ্গে, সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও বিজেপি'র প্রতিনিধি হওয়ায় সেখানে এ ধরনের ঘটনা আরও বেশি ঘটছে বলেও দাবি করেন তিনি।
শুধু মণিপুরে নয়, সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতে বিভাজনের রাজনীতির জেরে মানুষের মধ্যে বিভেদ করার চেষ্টা চলছে বলে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ইয়েচুরি। তাঁর মতে, এভাবে বিভাজনের রাজনীতি চলতে থাকলে আগামিদিনে তা খুবই ভয়ংকর আকার ধারণ করবে। তবে এই বিভাজন অসম রাজ্য থেকে শুরু হয়েছে বলেই মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, "যেন-তেন প্রকারে কখনও হিন্দু-মুসলিম, কখনও হিন্দু-খ্রিস্টান, এমনকী উপজাতি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আর যেখানে এই সব ইস্যু পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে অন্য কোনও ইস্যু তৈরি করে বিভেদ সৃষ্টি করে মূল সমস্যা থেকে নজর ঘোরানো হচ্ছে। এইভাবে রাজনীতি করে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে ।" তাঁর মতে, এইভাবে দেশের সর্বনাশ করছে বিজেপি। যার বিরুদ্ধে সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, "এই ভয়ংকর রাজনৈতিক মানসিকতাকে হারানো গুরুত্বপূর্ণ।"
এদিকে ভোট গ্রহণ শেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সংস্থা এবং বিশেষজ্ঞদের মত অনুসারে কর্ণাটকে এবার কংগ্রেস সরকার গড়তে চলেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে ইয়েচুরিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "এখনও পর্যন্ত যা ঘটনা ঘটছে তার ভিত্তিতে কংগ্রেস কর্ণাটকে ক্ষমতায় ফিরবে বলে মনে হচ্ছে। তবে কংগ্রেসের জেতার থেকে বিজেপি বেশি হারবে এটাই গুরুত্বপূর্ণ। বিজেপির বিরুদ্ধে সেই রাজ্যের মানুষের যা ক্ষোভ এবং রাগ রয়েছে তার প্রতিফলন ঘটবে ভোট বাক্সে। কারণ সেখানকার বিজেপি সরকার হিন্দুত্বের রাজনীতি জোর করে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। মানুষের জীবন যন্ত্রণার কোনও ইস্যু বিজেপির কোনও নেতার মুখে শোনা যায়নি। প্রতিটি বক্তব্য প্রতিটি ইস্যুতে হিন্দুত্ব রাজনীতি প্রকাশ পেয়েছে। এমনকী দেশের প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে যে সমস্ত কথা শোনা যাচ্ছে, তাতে তাঁদের ওই পদে থাকা শোভা পায় না। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হলেও যথাযথ পদক্ষেপ করবে বলে মনে হচ্ছে না।"
আরও পড়ুন: বিজেপি প্রার্থীর স্বামীকে পেটালেন সপা বিধায়ক, দেখুন ভিডিয়ো