490 বছরের বিতর্কের অবসান ঘটেছে গতবছরই । 9 নভেম্বরের সেই ঐতিহাসিক রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রামমন্দির হবে । আর বিকল্প হিসেবে মসজিদ তৈরির জন্য পাঁচ একর জমি পাবে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড । তারপর কেটে গেছে আটমাস । কোরোনার জেরে বদলেছে সামগ্রিক পরিস্থিতি । তবে অযোধ্যার রামমন্দির নির্মাণে কোথাও যেন এতটুকু খামতি নেই । আগামীকাল নির্ধারিত সময়ে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী । ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে । কিন্তু, এই সমস্ত কিছুর পিছনে এক দীর্ঘ ইতিহাস নীরবে দাঁড়িয়ে রয়েছে । সেই ইতিহাস বড়বাজার চত্বরের দুই ভাইয়ের গল্প বলে । গল্প অযোধ্যার শহিদ গলির । গল্প রামকুমার কোঠারি ও শরদকুমার কোঠারির ।
1990 সালের 2 নভেম্বর । কেটে গেছে 30 বছর । কিন্তু, এখনও কিছুই ভুলতে পারেননি রামকুমার ও শরদকুমারের দিদি পূর্ণিমা কোঠারি । আজ তিনি কিছুটা হলেও স্বস্তিতে । তাঁর কথায়, ''আমার ভাইদের বলিদান এবার সার্থক হতে চলেছে । ভাইরা যে উদ্দেশ্যে প্রাণ দিয়েছিল, এবার তা সফল হবে ।'' ভাইদের কথা বলতে বলতে নব্বই সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ফিরে যান তিনি ।
কী হয়েছিল সেদিন ?
1990 সালের সেপ্টেম্বর মাস । রামমন্দির আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ । গুজরাতের সোমনাথ থেকে 15 সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল । বিশ্ব হিন্দু পরিষেদের সেই যাত্রাকে সমর্থন করেছিলেন BJP-র অন্যতম বড় নেতা লালকৃষ্ণ আডবানি । সেই আন্দোলনে যোগ দিতেই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন বড়বাজারের কোঠারি পরিবারের দুই সন্তান । বড় ছেলে রামকুমার কোঠারি (22) ও ছোটো ছেলে শরদকুমার কোঠারি (20) । দুই ছেলের এই সিদ্ধান্তে খানিকটা চমকে যান বাবা হীরালাল কোঠারি । কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মেয়ে পূর্ণিমার বিয়ে হওয়ার কথা । কিন্তু, ছেলেদের জেদের কাছে হার মানতে হয় হীরালাল কোঠারিকে । 22 অক্টোবর অযোধ্যার ট্রেনে ওঠে দুই ভাই । করসেবকদের একাংশের তরফে জানা যায়, উত্তরপ্রদেশ সরকার তখন অযোধ্যায় তাঁদের ঢুকতে না দেওয়ার জন্য সড়ক এবং ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রিত করেছিল । পরে অন্য ট্রেন ধরে বেনারসে পৌঁছান করসেবকরা । সেখান থেকে কষ্ট করে অবশেষে 30 অক্টোবর অযোধ্যা পৌঁছান রামকুমার ও শরদকুমার । সেদিন কার্তিক পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে হনুমানগড়ি নামে এক জায়গায় জড়ো হন করসেবকরা । পরে সেখান থেকে রামমন্দিরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয় । নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কোঠারি ভাইরা । সেই যাত্রায় বাধা দিয়েছিল পুলিশ । দিদি পূর্ণিমা কোঠারির কথায়, 2 নভেম্বরের ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল 30 অক্টোবরই ।