পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

শিক্ষা মন্ত্রীকে চিঠি SFI সহ চারটি বাম ছাত্র সংগঠনের - Letters to the Minister of Education from 4 leftist student organizations, including SFI

শিক্ষা মন্ত্রীকে চিঠি পাঠালো SFI সহ চারটি বাম ছাত্র সংগঠন । এই সময়ে শিক্ষাক্ষেত্রে কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা ও বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন SFI - এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য ৷

Letters to the Minister of Education from 4 leftist student   organizations, including SFI
শিক্ষা মন্ত্রীকে চিঠি SFI সহ চারটি বাম ছাত্র সংগঠনের

By

Published : May 12, 2020, 11:22 PM IST

কলকাতা, 12 মে : শিক্ষা মন্ত্রীকে চিঠি পাঠালো SFI সহ চারটি বাম ছাত্র সংগঠন । এই সময়ে শিক্ষাক্ষেত্রে কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা ও বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন SFI - এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য ৷ উপস্থিত ছিলেন এ আই এস এফের রাজ্য সম্পাদক সৈকত গিরি ৷ PSU - র রাজ্য সম্পাদক নওফেল মহম্মদ শফিউল্লা ও AISB - র সাধারণ সম্পাদক সৌম্যদীপ সরকার ।

কোরোনা ভাইরাসজনিত লকডাউন ও তার পরবর্তী পরিস্থিতিতে শিক্ষাক্ষেত্রগুলি সামগ্রিকভাবেই কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে । এ সম্বন্ধে সরকারও কিছু ভাবনা চিন্তা করছে বলে শোনা যাচ্ছে । কয়েকটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে মতামত জানানো হয়েছে চিঠিতে । লকডাউনের মাঝামাঝি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বাধিকারের প্রশ্নটিকে এড়িয়েই আগামী বছর দুটি সেমিস্টারের পরীক্ষা একসঙ্গে করার কথা বলেছিলেন । বাম সংগঠনসমূহসহ অনেকেই তার প্রতিবাদ জানিয়েছে । বিশেষত CBCS - র আওতায় একই সেমিস্টারের সময়ে দুটি সেমিস্টারের সিলেবাস শেষ করা ছাত্র ও শিক্ষক উভয়ের পক্ষেই প্রচন্ড কঠিন হয়ে দাঁড়াবে । পরে UGC সুপারিশ করে লকডাউনের পরেই সেমিস্টার পরীক্ষা নিতে হবে । প্রয়োজনে আগামী শিক্ষাবর্ষ শুরুর দিনক্ষণ কিছুদিন পিছিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে করতে হবে । কয়েকদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, লকডাউন ওঠার এক মাসের মধ্যেই পরীক্ষা নেওয়ার কথা । ইতিমধ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে নোটিশও জারি হয়েছে । এই সিদ্ধান্ত খানিকটা একতরফাভাবেই নেওয়া হচ্ছে । সার্বিক ছাত্র স্বার্থের কথা মাথায় রাখা হচ্ছে না ৷ এমনটাই অভিযোগ, SFI - এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের ।

এক মাসের মধ্যে সেমিস্টার পরীক্ষা চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত বাতিল করার কথা জানানো হয়েছে শিক্ষামন্ত্রীকে । প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা থাকুক, ছাত্র-শিক্ষক শিক্ষাকর্মী সংগঠনগুলির মতামত নিয়ে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি অনুসারে পরীক্ষাসূচি গঠনের । যদিও এই প্রক্রিয়া অনন্তকালব্যাপী হতে পারে না । উচ্চ শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি অংশের মতামত নেওয়াটা জরুরি । দুঃখজনকভাবে সরকারের তরফে এই কাজটা একেবারেই করা হচ্ছে না বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে । টেকনিক্যাল ও প্রোফেশনাল কোর্সের ছাত্রদের ক্ষেত্রেও অনুরূপ পদ্ধতি গ্রহণ করার কথা ভাবা হোক । না হলে চূড়ান্ত বর্ষের একটা বড় অংশের ছাত্রদের কর্মহীনতার দিকে ঠেলে দিতে পারে সরকারের এই সিদ্ধান্ত । চলতি সেমিস্টারের জন্য প্রয়োজনে সিলেবাসের পুনর্বিন্যাস করা হোক । নির্দিষ্ট বিষয়াবলী নিয়ে নোটসের ব্যাঙ্ক করা হোক । শুধু অনলাইনেই নয়, ছাত্রদের বাড়িতে স্টাডি মেটেরিয়াল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক । অবশ্যই পঠন-পাঠন যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য লকডাউনের পর পর্যাপ্ত পরিমাণে এক্সট্রা ক্লাসের ব্যবস্থা করা হোক । তবে অনলাইন শিক্ষার ফলভোগী ও বঞ্চিতদের মাঝের ব্যবধান ঘুচিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার দিকে এগোনোর কথা ভাবা যেতে পারে । লকডাউন তো বটেই, পরবর্তী পরিস্থিতিতেও সকলের জন্য অনলাইন শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত না করে অনলাইনে পঠন-পাঠন ও পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা চলবে না । কেন্দ্রীয় সরকারের সর্বশেষ জাতীয় শিক্ষানীতিরই ভাবনার সাথে সামঞ্জস্য রেখেই অনলাইন শিক্ষায় জোর দেওয়ার কথা বলছে UGC । দেশ তথা রাজ্যের বাস্তবতায় এই মুহূর্তে অনলাইন শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার অর্থ ৷ একটা বড় অংশের প্রান্তিক দরিদ্র ছাত্রদের লেখাপড়ার জগৎ থেকে জোর করে বাদ দিয়ে দেওয়া । ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারিকরণ বাড়বে ও সার্বিকভাবে লেখাপড়ার খরচও বাড়বে ।

চারটি বাম ছাত্র সংগঠনের আশঙ্কা, বর্তমানের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির ফলে আগামী দিনে স্কুল শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা দুই ক্ষেত্রেই ড্রপ আউটের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হবে । বিশেষত পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের ছাত্ররা মারাত্মক বিপদে পড়বেন । কোনওরকম দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত থেকে রক্ষা পেতে অবিলম্বে এমন শিক্ষানীতির পরিকল্পনা প্রয়োজন ৷ যেখানে সকলের জন্য সুলভে শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা হবে । এমন নীতি প্রণয়নে দায়িত্বশীল ছাত্র সংগঠন সমূহ হিসেবে সরকারের সঙ্গে সমস্ত সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে এই চার বাম ছাত্র সংগঠন । আরও একটি বিষয় ৷ ফি মুকুবের সাথেই সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন , কেন্দ্র ও রাজ্য থেকে ছাত্র ও গবেষকদের প্রাপ্য স্কলারশিপ, ফেলোশিপের সাম্মানিক । কারণ অনেকেই এই সংকটের সময়ে ব্যাপক অর্থাভাবে পড়েছেন । লকডাউনের ফলে জনজীবনে নেমে আসা আর্থিক সংকটের কথা খেয়াল রেখে একটি সেমিস্টার ফি মুকুব করে দেওয়া প্রয়োজন । যে ছাত্ররা বার্ষিক পদ্ধতিতে শিক্ষা লাভ করছে ৷ তাদের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য । সেইসঙ্গেই রাজস্থানের কোটায় আটকে পড়া রাজ্যের ছাত্রদের যেভাবে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৷ তেমনভাবেই আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে থাকা রাজ্যের সকল ছাত্রদের ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন । অনুরূপভাবে, রাজ্যে আটকে পড়া ভিন রাজ্যের ছাত্রদেরও নিজের বাড়িতে ফেরানোর ব্যাপারে উদ্যোগে নেওয়া দরকার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের । বিশেষত জম্মু-কাশ্মীরে বর্তমান রাজ্য সরকার না থাকার দরুন ঘরে ফেরার আবেদন করার প্রশ্নে বাড়তি বিপদে পড়েছে সেই অংশের ছাত্ররা । সামগ্রিকভাবে এবিষয়ে কোনও হেল্প লাইন খোলা যায় কি না, তা ভেবে দেখার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে আবেদন জানিয়েছে চারটি বাম ছাত্র সংগঠন ।

For All Latest Updates

ABOUT THE AUTHOR

...view details