কলকাতা, 20 জুলাই:রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের সন্ত্রাস হয়েছে এই অভিযোগে বুধবারই বিজেপি মহামিছিল করে কলকাতায় ৷ আর সেই মিছিল থেকেই স্পষ্টভাবে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানান, ভোটে সন্ত্রাস এবং অশান্তির প্রতিবাদে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় বিডিও অফিস ঘেরাও করা হবে ৷ আর তার জন্য 21 জুলাই দিনটিকেই বেছে নিয়েছে বিজেপি ৷ সেই হুঁশিয়ারির জেরে এবার জেলায় বিডিও অফিসের নিরাপত্তা বাড়াল রাজ্য প্রশাসন ৷ অশান্তি ঠেকাতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বিডিও অফিস চত্বরে 144 ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের শুরু থেকেই অর্থাৎ মনোনয়ন পর্বের সময় থেকেই হিংসা চরমে পৌঁছয় ৷ যা অব্যাহত থেকেছে ফল ঘোষণার দিন পর্যন্ত ৷ খোদ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল, ভোটের বলি হয়েছে মোট 19 জন ৷ এরপরই গোটা ঘটনার দায় কার্যত বিডিও অর্থাৎ পঞ্চায়েত ভোটের রিটার্নিং অফিসারদের ঘাড়ে চাপিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের হুমকি দেয় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ৷ বিক্ষোভের কর্মসূচির কথাও ঘোষণা করে রাজ্য বিজেপি। তার মধ্যে অন্যতম ছিল প্রতি জেলার প্রতি ব্লকের বিডিও অফিস ঘেরাও করবে বিজেপি নেতা-কর্মীরা ৷ এবার এই কর্মসূচি আটকাতে মোক্ষম চাল দিল রাজ্য সরকার। অশান্তি ঠেকাতে বিডিও অফিস গুলিতে 144 ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
সূত্রের খবর, নবান্নের পরামর্শে প্রতিটি জেলার বিডিও অফিসেই এই 144 ধারা জারি করা হয়েছে। এভাবে 144 ধারা জারি হওয়ায় বিজেপি কতদূর কর্মসূচি পালন করতে পারবে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল। এমনিতেই একুশে জুলাইকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্যের নজর থাকবে কলকাতায়। এই অবস্থায় বিজেপির পালটা কর্মসূচিতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারত। আর সেই জায়গা থেকেই বিডিও অফিসগুলিতে 144 ধারা জারি করায় আদৌ শেষ পর্যন্ত বিজেপির এই কর্মসূচি করা সম্ভব কি না, তা নিয়েই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: 'মহিলাদের সম্মান লুটের সওদাগর বিজেপি', মণিপুরে যাওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ মমতার
প্রসঙ্গত, বুধবারের মহামিছিল থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেছিলেন, "ছাপ্পাশ্রী মুখ্যমন্ত্রী প্রাক্তন হবেন। একুশে জুলাই বিডিও অফিস ঘেরাও হবে।" এরপরই এদিন বিডিও অফিস গুলিতে 144 ধারা জারি করা হয়েছে। তারপর বৃহস্পতিবার রাতে অবশ্য বিজেপির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সরকার যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিতেই পারে। তার জন্য অবশ্য কর্মসূচি পরিবর্তণ হবে না ৷
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "ভয় পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সে কারণেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। তবে এসব করে বিজেপিকে আটকানো যাবে না। 144 ধারা জারি থাকার অর্থ ওখানে কেউ যেতে পারবে না এমনটা নয়। পুলিশ দিয়ে আমাদের কর্মসূচি আটকানোর চেষ্টা হতে পারে। কিন্তু বিজেপির কার্যকর্তারা কোনোভাবেই এসবের জন্য কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে আসছে না।"