কলকাতা, 18 ডিসেম্বর: এই মুহূর্তে দ্বিতীয় হুগলি সেতু (Second Hooghly Bridge) বা বিদ্যাসাগর সেতু হল কলকাতা এবং হাওড়ার মধ্যে সংযোগ সাধনে অন্যতম প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সেতু ৷ 3.6 কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু দিয়ে রোজ প্রায় 30 হাজার গাড়ি যাতায়াত করে ৷ এটি ভারতের দীর্ঘতম তারের ঝুলন্ত সেতু ৷ সূত্রের খবর, সংস্কারের জন্য ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম তিনমাস যানচলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে বিদ্যাসাগর সেতুতে ৷ ওই সময় কেবলমাত্র একটি লেন দিয়ে দুই দিকের যানবাহন চালানো হবে ৷ যদিও কবে থেকে কবে পর্যন্ত এই যাননিয়ন্ত্রণ করা হবে, সেই বিষয়ে এখনও নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি ৷ তবে নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, নতুন বছরের শুরুতেই ওই সেতুর 16টি 'কেবল' পরিবর্তন করা হবে ৷ আর সেই কারণেই যাননিয়ন্ত্রণ করা হবে বিদ্যাসাগর সেতুতে ৷
তথ্য বলছে, এই সেতু তৈরি হওয়ার পর যানচলাচল শুরু হয়েছিল 1992 সালে ৷ এরপর কেটে গিয়েছে 30 বছর ৷ প্রতিদিন এই সেতুকে হাজার হাজার যানের ভার বহন করতে হয় ৷ কলকাতার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ কিংবা ভিনরাজ্যের যোগাযোগের অন্যতম যোগসূত্র এটি ৷ ফলে যানবাহনের অত্যধিক চাপের জন্য সেতুর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ রয়েছেই ৷
আরও পড়ুন:13 ফেব্রুয়ারি 6 ঘণ্টা বন্ধ থাকবে দ্বিতীয় হুগলি সেতু
বছর তিনেক আগে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এই সেতুর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করানো হয়েছিল ৷ সেতুর দীর্ঘমেয়াদি সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবে সেই রিপোর্টে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল ৷ সেই প্রস্তাব মতো, 2021 সালের শেষ দিক থেকেই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের কাজে হাত দেয় 'হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স' (Hooghly River Bridge Commissioners) বা এইচআরবিসি (HRBC) ৷ সেই সময় বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ মেনে নিয়ে সেতুর উপরের দিকের দু'টি দিকেরই 'জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট' করা হয় ৷ সেই কাজ শেষ হয়েছে চলতি বছর ৷ এরপর আরও একদফা সেতুটির স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যায়, এই ব্রিজে থাকা কেবলগুলির বেশ কয়েকটিতে অতিরিক্ত ক্ষয় হয়েছে ৷ এখনই এর থেকে কোনও ঝুঁকি না থাকলেও, সেগুলি পরিবর্তন না-করলে ভবিষ্যতে বড়সড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে ৷ আর তাই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার পরই বিশেষজ্ঞরা সেতুর 16টি কেবল বদলের সুপারিশ করেন ৷ সেই প্রস্তাব মেনেই আগামী বছরের শুরুর দিকে এই সংস্কারের কাজ সেরে ফেলতে চাইছে নবান্ন ৷
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যখন সংস্কারের কাজ চলবে, সেই সময় সেতুর উপর যাননিয়ন্ত্রণ করা হবে ৷ যাত্রীবাহী বাস, ছোট গাড়ি, দুই চাকার যান ছাড়া আর কোনও গাড়ি ওই সময় সেতুর ওপর দিয়ে চালানো হবে না ৷ বিশেষ করে ভারী ও বড় পণ্যবাহী গাড়ির চলাচল ওই সময় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে ৷ পণ্যবাহী গাড়ি কলকাতায় ঢোকার বা শহর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রবীন্দ্র সেতু ও নিবেদিতা সেতু ব্যবহার করা হবে ৷