কসবায় দশম শ্রেণির ছাত্রের রহস্যমৃত্যু কলকাতা, 4 সেপ্টেম্বর: কসবার রথতলা সিলভার পয়েন্ট হাইস্কুলে ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। সোমবার দুপুরে স্কুলের পাঁচতলার নীচ থেকে উদ্ধার হয় ওই দশম শ্রেণির ছাত্রের রক্তাক্ত দেহ। 16 বছরের ওই পড়ুয়ার বাবার দাবি, তাঁর ছেলেকে প্রাণে মেরেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার দুপুরে মৃত ছেলের বাবার কাছে ফোন যায়, তাঁকে বলা হয় ছেলে স্কুলের সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছে। তাঁরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এরপর তাঁর ছেলে মারা গিয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি আরও জানতে পারেন ছেলে স্কুলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়েছে। কিন্তু তাঁর ছেলে যে আত্মহত্যা করেছে সেটা তিনি মানছেন না। কারণ, এই বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা এই বিষয়ে স্পষ্টভাবে তাঁকে কোনও তথ্য দেননি।
দ্বিতীয়ত, একজন পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিলে তাঁর শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন থাকবে। তাঁর অভিযোগ, সেক্ষেত্রে তার ছেলের গায়ে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। ছেলের কান থেকে শুধুমাত্র রক্ত বেরিয়েছে। এছাড়াও তিনি জানতে পেরেছেন, এদিন দুপুরবেলা স্কুলের এক শিক্ষিকা তার ছেলে ও এক সহপাঠীকে স্কুলের পাঁচতলায় একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন। এখানেই তিনি জানতে চান, একজন পড়ুয়াকে স্কুলের পাঁচতলায় কেন নিয়ে গেলেন শিক্ষিকা?
কেন ওই শিক্ষিকা তার ছেলের সহপাঠীকে নীচে চলে যেতে বললেন ৷ আর কেনই বা তাঁর ছেলেকে উপরেই রেখে দিলেন? ছাত্রের বাবা আরও জানান, করোনা কালে তিনি স্কুলের মাইনে কমানোর জন্য সকল স্কুল পড়ুয়ার অভিভাবকদের নিয়ে স্কুলের হেড মিস্ট্রেসের কাছে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়। মৃত পড়ুয়ার বাবার আরও দাবি, প্রধান শিক্ষিকা হুমকি দিয়েছিলেন সেদিনই। 'ইউ আর আইডেন্টিটিফাইড'।
তাঁর আরও অভিযোগ, এরপরেই সেদিন রাতে স্থানীয় কসবা থানা থেকে তাঁকে ফোন করে বলা হয় তিনি নাকি স্কুলের এক শিক্ষিকাকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করেছেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ মৃত ওই স্কুল পড়ুয়ার বাবার অভিযোগ, এরপর থেকেই তার ছেলের বিরুদ্ধে নানা সময়, নানা অভিযোগ তুলতে শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই ঘটনার বদলা নিতেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তার বাবা জানিয়েছেন ৷
অন্যদিকে, ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এবং কসবা থানার পুলিশ। যদিও এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ এক আধিকারিক বলেন, "দেহ ময়নাতদন্ত হবে। এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে আমরা একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছি। মৃত পড়ুয়ার অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।"পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:দার্জিলিংয়ে লটারির টিকিট বিক্রির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের চাপে আত্মঘাতী নবমের ছাত্র ! গ্রেফতার প্রধান শিক্ষক